সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়া জীবনঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় সফলতার দাবি করেছেন থাইল্যান্ডের চিকিৎসকরা। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) থাইল্যান্ডের রাজাভিথি হাসপাতালের চিকিৎসকরা ফ্লু ও এইচআইভি’র চিকিৎসায় ব্যবহৃত প্রতিষেধকের মিশ্রণ ব্যবহার করে সফলতা পাওয়ার দাবি করেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়।
উল্লেখ্য, এইচআইভি চিকিৎসায় লোপিনাভির ও রিটোনাভির ব্যবহার করা হয় এবং ফ্লু'র চিকিৎসায় ওসেলটামিভির ব্যবহার করা হয়। এই দুইয়ের সংমিশ্রণে তৈরি ওষুধ প্রয়োগ করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়া ব্যক্তিদের চিকিৎসায় ব্যাপক সাফল্য মিলেছে বলে দাবি করেছেন রাজাভিথি হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
তারা জানান, ৭০ বছর বয়সী এক চীনা বৃদ্ধার উপর নতুন এই প্রতিষেধক প্রয়োগ করার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে করোনাভাইরাস টেস্টে "নেগেটিভ" প্রমাণিত হয়েছেন তিনি। ১০ দিন আগে ওই বৃদ্ধার করোনাভাইরাস ধরা পড়ে।
রাজাভিথি হাসপাতালের ফুসফুস বিশেষজ্ঞ ড. ক্রিয়াংস্কা আটিপর্নওয়ানিচ বলেন, "এই পদ্ধতিতে সম্পূর্ণ আরোগ্যলাভ না হলেও রোগীদের শারীরিক অবস্থার আশাব্যাঞ্জক উন্নতি হচ্ছে। এই ওষুধ প্রয়োগের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ১০ দিন ধরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী টেস্টে নেগেটিভ প্রমাণিত হয়েছেন।"
ড. আটিপর্নওয়ানিচ সাংবাদিকদের আরও বলেন, "আপাত দৃষ্টিতে এই চিকিৎসাটিতে কাজ দিলেও, এই পদ্ধতিটিই সঠিক কিনা তা নির্ণয় করার জন্য বিশদ গবেষণা প্রয়োজন।"
চীনের চিকিৎসকরা করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় নতুন এই পদ্ধতিটি ইতোমধ্যে প্রয়োগ করা শুরু করেছেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে আরেকজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, এই একই পদ্ধতি অন্য দুইজন আক্রান্ত ব্যক্তির উপরও প্রয়োগ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিলেও অন্যজনের শারীরিক অবস্থার বেশ উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে।
থাইল্যান্ডের ডিরেক্টর জেনারেল অব মেডিকেল সার্ভিসেস সোমসাক আকস্লিম জানান, চীনা বৃদ্ধার চিকিৎসায় ব্যবহৃত পদ্ধতিটি অন্য সবার ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা যাবে কিনা সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে সোমবার বৈঠকে বসবে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, থাইল্যান্ডে এখনও পর্যন্ত ১৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এদেরমধ্যে ৮জন আরোগ্য লাভ করে বাড়ি ফিরে গেছেন।