আম আদমি পার্টির নেতা সঞ্জয় সিংহ বলেন, ‘বিভাজনের রাজনীতিকে দূরে ঠেলে শেষপর্যন্ত উন্নয়নকেই বেছে নেওয়ার জন্য দিল্লির জনগণকে অভিনন্দন’
বুথ-ফেরত সমীক্ষাকে সত্যি প্রমাণ করে ভারতের দিল্লিতে পরপর তিনবার ক্ষমতায় এলো আম আদমি পার্টি (আপ)। মঙ্গলবার (১১ ডিসেম্বর) রাত পর্যন্ত ৭০টি আসনের মধ্যে ৬২টি কেন্দ্রে হয় জিতেছেন, নাহয় এগিয়ে রয়েছেন আপ প্রার্থীরা। এক প্রতিবেদনে এই জয়ের খবর জানিয়েছে আনন্দবাজার।
অথচ, কয়েকমাস আগেই লোকসভা ভোটে দিল্লির সাতটি আসনই জিতেছিলো বিজেপি। সেখানে বিধানসভায় আটটির বেশি আসন দখল করতে ব্যর্থ মোদীর দল। অন্যদিকে, লোকসভা নির্বাচনে ভোটপ্রাপ্তির হিসেবে দ্বিতীয়স্থানে থাকা কংগ্রেস এবারও দিল্লিতে খাতা খুলতে ব্যর্থ।
সন্ধ্যায় টুইট করে কেজরিওয়ালকে জয়ের শুভেচ্ছা জানান মোদী। অভিনন্দন জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও।
আপ সূত্রমতে, ১৪ ফেব্রুয়ারি শপথ নেওয়ার কথা ভাবছেন কেজরিওয়াল। ২০১৪ সালে প্রথম দফায় ৪৯দিন ক্ষমতায় থাকার পর এই তারিখেই ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। ২০১৫ সালে ফের শপথ নিয়েছিলেন ওই তারিখেই।
আপ নেতৃত্বের দাবি, কার্যত এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে ভারতের রাজনীতি। তাদের যুক্তি, সিএএ, এনআরসি’কে হাতিয়ার করে সমাজকে বিভাজিত করার কৌশল নিয়েছিল বিজেপি। জামিয়া-শাহিনবাগকে সামনে রেখে প্রবল মেরুকরণের চেষ্টা হয়েছিল। এমনকি কেজরিওয়ালকে জঙ্গি আখ্যাও দিয়েছিলেন বিজেপি নেতারা। অন্যদিকে, মেরুকরণ ও কু-কথার রাজনীতি এড়িয়ে কেজরিওয়াল ভরসা রাখেন নাগরিক জীবনের মৌলিকচাহিদা পূরণের বিষয়গুলি প্রচারে। দিনশেষে তাই পরাস্ত হয়েছে বিভেদসৃষ্টিকারী শক্তি, জিতেছে উন্নয়ন।
সিএএ, এনআরসি-কে হাতিয়ার করে মেরুকরণের যে চেষ্টা বিজেপি করেছিল, শেষপর্যন্ত তা সাফল্যের মুখ দেখেনি। দিল্লির পরে সারা ভারতের মানুষও “কাজের রাজনীতি”-কেই বেছে নেবে বলে আশা কেজরিওয়ালের।
আপ নেতা সঞ্জয় সিংহ বলেন, ‘‘বিভাজনের রাজনীতিকে দূরে ঠেলে শেষপর্যন্ত উন্নয়নকেই বেছে নেওয়ার জন্য দিল্লির জনতাকে অভিনন্দন।’’
অন্যদিকে, ঘনিষ্ঠ মহলে বিজেপি নেতৃত্ব মানছেন, দল যে মেরুকরণের রাজনীতিতে ভরসা করেছিল তা সাধারণ মানুষ গ্রহণ করেননি। পরিবর্তে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবায় দৃষ্টান্তমূলক উন্নতি, নিখরচায় বিদ্যুৎ, নারীদের বাসে যাতায়াত বিনামূল্যে করার মতো জনমুখী সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। বিভাজনের রাজনীতি হেরে গিয়েছে মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের কাছে।
তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসেই দিল্লিকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ও দিল্লি পুলিশের দায়িত্ব সরকারের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে সরব হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আপ। জয়ের দিনই দেশটির প্রধানমন্ত্রীর টুইটের উত্তরে তিনি বলেছেন, ‘‘দিল্লিকে বিশ্বমানের শহর বানানোর জন্য আমি কেন্দ্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করতে প্রস্তুত।’’
মতামত দিন