মিয়ানমার পুলিশ মাঝেমধ্যেই ‘অবৈধ ভ্রমণের’ অভিযোগে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুলসমানদের গ্রেপ্তার করে
মিয়ানমারের ইয়াংগুনে একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে প্রায় একশ’ রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। স্থানীয় গণমাধ্যম ও পুলিশের পক্ষ থেকে এখবর জানানো হয়েছে।
স্থানীয় “টুমোরো নিউজ জার্নাল”-এ প্রকাশিত ছবিতে দেখা গিয়েছে, বেশ কয়েকজন নারী ও পুরুষ খালিপায়ে একটি আদালত প্রাঙ্গণের মাটিতে বসে আছে। মিয়ানমার পুলিশ মাঝেমধ্যেই “অবৈধ ভ্রমণের” অভিযোগে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুলসমানদের গ্রেপ্তার করে।
স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা থিন মাউং লউইন গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও এবিষয়ে আর কোনও তথ্য জানাতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘‘তদন্ত এখনও চলছে। ৯৮ থেকে ৯৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারির বিস্তার রোধে তাদের কোয়ারেন্টিন সেন্টারে পাঠানো হবে।”
২০১৭ সালে মিয়ানমারের পশ্চিমের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যে সন্ত্রাস দমনের নামে সেনা অভিযান শুরু হলে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।
এখনও প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমারে বসবাস করছে। সেখানে যাদেরকে চরম “জাতিবিদ্বেষের শিকার হতে হচ্ছে” বলে মনে করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এই রোহিঙ্গাদের বেশিরভাগকেই হয় ক্যাম্পে না হয় গ্রামের ভেতর প্রায় বন্দি জীবন কাটাতে হচ্ছে। তারা এমনকী চিকিৎসা বা শিক্ষার জন্যও বাইরে স্বাধীনভাবে ভ্রমণ করতে পারে না।
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব দিতে রাজি নয় দেশটির সরকার। বরং তাদেরকে প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ শরণার্থী বলে গণ্য করা হয়। অথচ রোহিঙ্গার অনেকের পূর্বপুরুষ শতশত বছর ধরে মিয়ানমারে বসবাস করছে।
গত কয়েক বছর ধরে মিয়ানমার পুলিশ রাখাইন রাজ্য ছেড়ে বের হওয়ার অভিযোগে শতশত রোহিঙ্গাকে কারাবন্দি করেছে বা যুব সংশোধনাগারে পাঠিয়েছে। ওইসব রোহিঙ্গার বেশিরভাগই পালিয়ে থাইল্যান্ড বা মালয়েশিয়া চলে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব নয় বরং “ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড” দিতে চায়। কিন্তু বেশিরভাগ রোহিঙ্গাই তা নিতে রাজি নয়। তাদের অভিযোগ, ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড গ্রহণ করলে নিজ দেশেই তারা “বিদেশি” বলে গণ্য হবে।
মতামত দিন