টানা ২৮৮ দিন অনশনের মাথায় মারা গেলেন জনপ্রিয় তুর্কি ব্যান্ডদল "গ্রুপ ইয়োরামের" সদস্য হেলিন বোলেক (২৮)। ব্যান্ডদল ও শিল্পীদের ওপর নিষেধাজ্ঞাসহ এরদোয়ান সরকারের একাধিক দমনমূলক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এক সহশিল্পীকে নিয়ে অনশনে বসেছিলেন হেলিন।
শুক্রবার (০৩ এপ্রিল) রাজধানী ইস্তাম্বুলের একটি বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ওই বাড়িতে বসেই অনশন চালিয়ে যাচ্ছিলেন হেলিন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে টুইটারে গ্রুপ ইয়োরামের দেওয়া এক পোস্টের বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস।
উল্লেখ্য, নিজস্ব ধারায় গানে গানে অন্যায়-অনিয়মের প্রতিবাদ করে তুরস্কের সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে ব্যান্ডটি। কিন্তু ২০১৬ সাল থেকে এরদোয়ান সরকার তুরস্কে তাদের গান গাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পাশাপাশি, কারাগারে পাঠায় কয়েকজন সদস্যকে।
সরকারের অভিযোগ, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে গ্রুপ ইয়োরামের।
এই অভিযোগে ব্যান্ডটির কয়েকজন সদস্যকে কারাগারে পাঠানোর পর থেকেই সহশিল্পী ইব্রাহিম গোকচেকের সঙ্গে অনশন শুরু করেন হেলিনা। তাদের দাবি ছিল ব্যান্ডের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং কারাবন্দি শিল্পীদের মুক্তি।
কিন্তু, কয়েকজন ব্যান্ড শিল্পীকে মুক্তি দেওয়া হলেও দাবি অনুযায়ী এরদোয়ান প্রশাসন তাদের ব্যান্ডের ওপর থেকে সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়নি। মুক্তি দেওয়া হয়নি ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য ইব্রাহিম গোকচেকের স্ত্রীকেও।
গত ১১ মার্চ হেলিনা ও ইব্রাহিমকে জোরপূর্বক হাসপাতালে পাঠায় তুরস্ক সরকার। কিন্তু চিকিৎসা নিতে অস্বীকৃতি জানালে এক সপ্তাহ পরে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে আঙ্কারা-ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন আইএইচডি।
আইএইচডি আরও জানায়, হেলিনা ও ইব্রাহিমের অনশনের বিষয়ে কথা বলতে এবং বিষয়টির একটি যৌক্তিক সমাধান করতে গতমাসে মানবাধিকার কর্মীদের একটি প্রতিনিধিদল তুরস্কের ডেপুটি ইন্টেরিয়র মিনিস্টারের সঙ্গে আলোচনায় বসে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে সরে না এলে সরকার তাদের দাবি "মূল্যায়ন" করতে রাজি নয়।
হেলিনা বোলেকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রখ্যাত শিল্পী জুলফু লিভানেল্লি। ২০১২ সালে গ্রুপ ইয়োরামের একটি কনসার্টে গেয়েছিলেন তিনি।