করোনার কারণে আগামী দুইবছরে ৪০ লাখ মেয়ে বাল্যবিয়ের শিকার হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে দাতব্য প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ভিশন৷ তাই এখনই কার্যকর উদ্যোগ না নিলে বাল্যবিয়ে বন্ধে অতীতের সাফল্য ভেস্তে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷ এক প্রতিবেদনে এখবর জানিয়েছে জার্মান সংবাদ সংস্থা ডয়েচে ভেলে।লকডাউনের কারণে জীবিকা কমে যাওয়ায় পরিবারের উপর নির্ভরতা কমাতে অনেকে তাদের মেয়েদের অল্প বয়সেই বিয়ে দিয়ে দিতে পারেন বলে মনে করছে ওয়ার্ল্ড ভিশন৷
সংঘাত, দুর্যোগ কিংবা মহামারির সময় বাল্যবিয়ের সংখ্যা বাড়ে বলে জানিয়েছেন ওয়ার্ল্ড ভিশন কর্মকর্তা এরিকা হল৷
তিনি বলেন, ‘‘এসব বিয়ে ঠেকাতে আমরা যদি এখনই কাজ শুরু না করি, তাহলে অনেক দেরি হয়ে যাবে৷ স্বাস্থ্য সংকট শেষ হওয়া পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করে থাকতে পারি না৷’’
স্কুল বন্ধ থাকা ও করোনার কারণে বিভিন্ন সংস্থা পুরোদমে কাজ করতে পারছে না বলে বাল্যবিয়ের ঝুঁকি আরও বাড়ছে৷
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রতিবছর বিশ্বের প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মেয়ের বয়স ১৮ হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যায়৷
এপ্রিলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে আগামী একদশকে অতিরিক্ত আরো ১ কোটি ৩০ লাখ নাবালিকা বাল্যবিয়ের শিকার হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে জাতিসংঘ৷
বাল্যবিয়ে ঠেকাতে কাজ করা ১,৪০০-র বেশি সংস্থার বৈশ্বিক সংগঠন “গার্লস নট ব্রাইডস” বলছে, তাদের সদস্য সংস্থাগুলো খুবই উদ্বিগ্ন৷
‘‘মাঠে যারা কাজ করছে তারা জানাচ্ছেন পরিস্থিতি ভালো ঠেকছে না৷ আমাদের মনে হচ্ছে আমরা সামনে অনেক বাল্যবিয়ে দেখতে পাবো,’’ জানাচ্ছেন গার্লস নট ব্রাইডসের প্রধান নির্বাহী ফেইথ মোয়াঙ্গি-পাওয়েল৷
তিনি বলেন, ‘‘ভারত, আফ্রিকা, লাতিন অ্যামেরিকা থেকে আমরা এসব শুনতে পাচ্ছি৷ কেউ বলছেন, বাল্য়বিয়ে ঠেকাতে গত কয়েক দশকে আমরা যত কাজ করেছি তা আবার ফিরে আসতে পারে৷স্কুল মেয়েদের রক্ষা করে৷ স্কুল যখন বন্ধ থাকে তখন বাল্যবিয়ের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়৷’’
ওয়ার্ল্ড ভিশন কর্মকর্তা এরিকা হল জানিয়েছেন, সাউথ সুদান, আফগানিস্তান ও ভারতে বাল্য়বিয়ে বাড়ার প্রমাণ তারা ইতিমধ্যে পেয়েছেন৷
তিনি বলেন, “পরিবারে সন্তানের সংখ্যা কমাতে মা-বাবারা মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন৷ এটা আসলে বেঁচে থাকার একটা কৌশল৷ বিদ্বেষ থেকে মা-বাবারা এটা করেন না- এছাড়া আসলে তাদের আর কোনো বিকল্প নেই।”