প্রথমবারের মতো “আল আমাল” নামে একটি মহাকাশযান মঙ্গলগ্রহের উদ্দেশে উৎক্ষেপণ করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
সোমবার (২০ জুলাই) মহাকাশযানটি নিয়ে জাপানের তানেগাশিমা স্পেস সেন্টার থেকে রওনা হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি। মঙ্গলগ্রহের আবহাওয়া ও জলবায়ু নিয়ে পরীক্ষা করতে প্রায় পাঁচশ’ মিলিয়ন কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে মহাকাশযানটিকে। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে এর আগে দুবার প্রস্তুতির পরেও এ মিশনের উৎক্ষেপণ স্থগিত করা হয়েছিলো।
জার্মান ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “আমাল” যার অর্থ আশা। আমাল নামক মহাকাশযানটি আক্ষরিক অর্থেই দেশটির জন্য আশার সঞ্চার করেছে। কেননা, দেশটির ৫০ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথমবারের মতো মহাকাশযান উৎক্ষেপণ, অন্যদিকে এ উৎক্ষেপণ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণই নারী নেতৃত্বাধীন।
মিশনটির বৈজ্ঞানিক দলের প্রধান সারাহ আমিরি। মহাকাশযানটির সফল উৎক্ষেপণের পর তার স্বস্তি প্রকাশ করে তিনি বলেন, “সফলভাবে মহাকাশযান উৎক্ষেপণ অনেকটাই ৫১ বছর আগে আমেরিকার চাঁদে পা রাখার মতো।” এ ধরনের কর্মকাণ্ড তরুণদেরকে আরও বেশি উদ্বুদ্ধ করবে মহাকাশ গবেষণায়।পাশাপাশি আরব আমিরাতকে নিয়ে যাবে শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর সাথে, এমন আশার কথাও জানান তিনি।
তবে বিজ্ঞানকে অবশ্য এত ছোট গণ্ডিতে বেঁধে রাখতে রাজি নন, ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনটিতে তিনি বলেন, ‘‘আমার কাছে বিজ্ঞান হচ্ছে জোটবদ্ধ হওয়ার সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক উপায়৷এটা সীমাহীন, সীমানাহীন বিষয়৷”
বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, “২০ জুলাই সকালে ঘুম থেকে উঠেই আরব আমিরাতের শিশুরা আমাদের নিজস্ব অভিযানটি দেখতে পেয়েছে, এটি ভেবে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।”
ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, তিন বছর আগে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত বিজ্ঞানীদের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পান আমিরি৷ বিশ্বের প্রথম আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স মন্ত্রীও হিসেবেও দায়িত্ব পান তিনি৷ এছাড়া হোপ বা আশা নামের প্রকল্পের ডেপুটি ম্যানেজার এবং বিজ্ঞানী দলের প্রধানও তিনি৷
আমিরির কর্মজীবন শুরু হয় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে৷ পরে আমিরাতের ইন্সটিটিউশন ফর অ্যাডভান্সড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে মহাকাশ প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করার সুযোগ পান তিনি৷ মাত্র ১২ বছর বয়সে মহাকাশ নিয়ে কাজ করবেন এমন স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি৷
প্রসঙ্গত, সংযুক্ত আরব আমিরাতের কর্মক্ষেত্রের ২৮ ভাগ নারী৷ তবে মঙ্গল মিশনের শতকরা ৩৪ এবং বিজ্ঞানীদের দলের ৮০ ভাগই নারী৷ ভবিষ্যতে সব ক্ষেত্রেই নারীর অংশগ্রহণ আরেও বাড়াতে চান সারাহ আমিরি৷