করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা, আইসিইউ শয্যা স্থাপন, এমনকি আরও শয্যা কেনার পরেও ইউরোপের দেশগুলো রোগী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। সেখানে যেন প্রতিশোধের নেশায় ঝাঁপিয়ে পড়েছে কোভিড-১৯ মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ।
ফ্রান্সের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) জানিয়েছে, দেশটিতে মহামারি শুরু হওয়ার পর এ প্রথমবারের মতো এক দিনে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ বুধবার কমপক্ষে চার সপ্তাহের জন্য প্যারিস এবং আরও আট শহরে রাতের বেলায় কারফিউ জারির ঘোষণা দিয়েছেন।
নেদারল্যান্ড বৃহস্পতিবার এক দিনে নতুন করে ৭ হাজার ৮৩৩ কোভিড-১৯ রোগী শনাক্তের তথ্য জানিয়েছে। তার আগের ২৪ ঘণ্টায় যার সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ২৯৬ জন।
বেলজিয়ামের কর্তৃপক্ষ ৫ থেকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত দৈনিক গড়ে ৫ হাজার ৪২১ রোগী শনাক্ত করেছে, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ১০১% বেশি। বুধবার হাসপাতালের ১ হাজার ৭৭৭টি শয্যা কোভিড-১৯ রোগীদের দখলে ছিল। গত ৭ অক্টোবর এ সংখ্যাটি ছিল ১ হাজার ৫০। বৃদ্ধির হার ৬৯%।
ইউরোপে করোনাভাইরাস মহামারির প্রথম ঢেউয়ের সময় মূলকেন্দ্র ছিল ইতালি। সেখানে বৃহস্পতিবার নতুন রেকর্ড ৮ হাজার ৮০৪ জনের সংক্রমণ হয়। আগের দিন এটি ছিল ৭ হাজার ৩৩২ জন।
এমনকি আয়ারল্যান্ডে ১ হাজার ৯৫ নতুন রোগী শনাক্ত হওয়ার তথ্য বুধবার জানানো হয়েছে। দেশটিতে মহামারির প্রাদুর্ভাবের পর এটিই এক দিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড।
বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপবিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক ডা. হানস ক্লোগ নিশ্চিত করেন যে ইউরোপে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ৭০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। শুধুমাত্র গত সপ্তাহেই নতুন শনাক্ত হয়েছেন প্রায় ৭ লাখ, যা মহামারি শুরুর পর এক সপ্তাহে সর্বোচ্চ কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঘটনা।
নতুন করে মহাদেশটিতে সংক্রমণের উচ্চহারকে উদ্বেগজনক বলে আখ্যা দিয়েছে জাতিসংঘ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আঞ্চলিক প্রধান ডা. হানস হেনরি পি ক্লোগ বলেছেন, কোভিড-১৯ এখন ইউরোপে মৃত্যুর পঞ্চম প্রধান কারণ।