গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানে সরকারি কোষাগার সমৃদ্ধ করার প্রচেষ্টায় এবার ইমরান খানের সরকার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের আটটি দামি মহিষ বিক্রি করে দিয়েছে। বিবিসি অনলাইনের একটি খবরে এই তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক নির্বাচনে দুর্নীতিবিরোধী সংস্কারের অঙ্গীকার করে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন ইমরান খান। দায়িত্ব নেওয়ার পর ইমরান সরকারী ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেন। তারই অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে রাখা মহিষগুলো নিলামে তুলে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন ইমরান খান।
প্রসঙ্গত, এই মহিষগুলো নওয়াজ ও তাঁর পরিবারের দুধের উৎস ছিল। গত ১০ দিনে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার সরকারি সম্পদ বিক্রির ঘটনা ঘটল। এর আগে একটি বুলেট প্রুফ গাড়ি নিলামে তুলে বিক্রি করা হয়েছিল।
নিলামে আটটি মহিষের দাম ওঠে ১৯ হাজার ডলার বা সাড়ে ২৩ লাখ পাকিস্তানি রুপির মতো যা সরাসরি সরকারী কোষাগারে যোগ করা হয়েছে। নিলামে নওয়াজের অনেক সমর্থকও অংশ নেনে। নিলামে অংশ নেওয়া হাসান লতিফ নামের এক দুগ্ধ খামার মালিক নয়াজের একটি মহিষ কিনতে সক্ষম হন। তিনি বলেন, ‘ঐতিহাসিক রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে আমার নেতা নওয়াজের একটি মহিষ কিনেছি তিনি। নেতার সম্মানেই মহিষটি কিনেছি। সুযোগ পেলে এই মহিষটি নেতাকে উপহার দেব’।
এদিকে, নতুন সরকারের এই কথিত কৃচ্ছ্র সাধনপ্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মহিষগুলো বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাশাপাশি সমালোচনাও কুড়িয়েছে। সমালোচকরা দাবী এই পুরো ব্যাপারটিই আসলে লোক দেখানো। ইমরান ব্যয় সংকোচনের কথা বলছেন। অথচ গত আগস্টে জানা গেল, কাজে যেতে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরত্বের পথে তিনি হেলিকপ্টার ব্যবহার করছেন। অনেকে আবার এই নিলামের ক্রেতাদের সাজানো বলে দাবী করছেন। তাদের দাবী মহিষগুলোর দাম এত বেশি হতে পারেনা।
তবে, মানুষ সমালোচনা করলেও বেশি দাম পাওয়ায় সরকার খুশি হয়েছে বলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর ব্বাসভবন সূত্রে জানা গেছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা যে দাম আশা করেছিলাম, তার চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হয়েছে মহিষগুলো। আমরা এতে খুশি’।
উল্লেখ্য, দেশের অর্থনীতি ঠিক রাখতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে যাওয়া ইমরানের সরকার নানা উপায়ে সরকারের ব্যয় কমানোর চেষ্টা করছে।
তবে, সরকারের তরফ থেকে ব্যয় কমানোর কথা বলা হলেও অনেকেই এই মহিষ বিক্রির ঘোটনার পিছনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা কাজ করছে বলে মনে করছেন।
সূত্র: প্রথম আলো।