চীনের পূর্বাঞ্চলীয় জিয়াংশু প্রদেশে বিশ্বে প্রথমবারের মতো মানবদেহে বার্ড ফ্লুর এইচ১০এন৩ ধরন শনাক্ত হয়েছে। মঙ্গলবার (১ জুন) ওই প্রদেশে বসবাসকারী ৪১ বছর বয়সী এক ব্যক্তির শরীরে বার্ড ফ্লুর এই ধরনটি শনাক্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন (এনএইচসি)।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৮ এপ্রিল ওই ব্যক্তি জ্বরসহ একাধিক উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এর এক মাস পর ওই ব্যক্তির শরীরে এইচ১০এন৩ ধরন অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়।
এনএইচসি জানিয়েছে, বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত ওই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল। শিগগিরই তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হবে। তার ঘনিষ্ঠ আর কেউ এ ভাইরাসে আক্রান্ত নন বলেও জানিয়েছে তারা। তবে ওই লোক কীভাবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলেন তা জানায়নি চীনা কর্তৃপক্ষ।
বার্ড ফ্লু ভাইরাসের এইচ১০এন৩ প্রজাতিটি কম জীবাণুবাহক এবং তুলনামূলকভাবে তেমন গুরুতর নয়। সাধারণত পোল্ট্রি শিল্পে বার্ড ফ্লু ভাইরাসের এই ধরনটির সংক্রমণ দেখা যায় এবং বৃহৎ পরিসরে এর ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি অত্যন্ত কম।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার আন্তঃসীমান্ত প্রাণীরোগ কেন্দ্রের আঞ্চলিক গবেষণাগার সমন্বয়ক ফিলিপ ক্লায়েস বলেন, “ভাইরাসের এই ধরনটি খুব পরিচিত নয়। ২০১৮ সালের আগে ৪০ বছরে ভাইরাসটির মাত্র ১৬০টি আইসোলেট শনাক্ত হয়, যার বেশিরভাগই ছিল এশিয়া-উত্তর আমেরিকার বন্য ও জলচর পাখিদের মধ্যে। এখন পর্যন্ত মুরগির শরীরে ধরনটি পাওয়া যায়নি। তবে চীনে শনাক্ত ধরনটি আগের ভাইরাসটিই নাকি তাতে নতুন কোনো কিছু যোগ হয়েছে তা নিশ্চিত হতে জিনগত বিশ্লেষণ জরুরি।”
এনএইচসির তথ্যমতে, চীনের ওই ব্যক্তি ছাড়া এখন পর্যন্ত বিশ্বে আর কেউ এইচ১০এন৩ ধরনটিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায়নি। ২০১৬-১৭ সালে বার্ড ফ্লুর এইচ৭এন৯ ধরনে প্রায় ৩০০ জনের প্রাণহানি ঘটে। তখন থেকে মানবদেহে বার্ড ফ্লু সংক্রমিত হওয়ার উল্লেখযোগ্য ঘটনা পাওয়া যায়নি।
