লিবিয়া থেকে অবৈধভাবে ইউরোপে যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগর থেকে ৪৩৯ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৬৪ জন বাংলাদেশিও রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস।
লিবিয়া অবজারভারের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১০ জুন) দেশটির কোস্টগার্ড আলাদা দুটি উদ্ধার অভিযান চালায়। এই অভিযানে ৪৩৯ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী উদ্ধার হন। তারা সবাই আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশের নাগরিক। তারা সমুদ্রপথে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
লিবিয়ান নৌবাহিনীর মুখপাত্র জানান, উদ্ধারের পর তাদের জাহাজ দুটি রাজধানী ত্রিপোলির নৌ-ঘাঁটিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে আসে। পরবর্তী প্রক্রিয়ার জন্য তাদের অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বর্তমানে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশিদের খোঁজ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান চার্জ অফ দ্য অ্যাফেয়ার্স গাজী মো. আসাদুজ্জামান কবির।
উল্লেখ্য, গত ১৮ মে তিউনিসিয়ার উপকূলে নৌকাডুবির ঘটনায় ৬৮ বাংলাদেশিকে উদ্ধার করেছিল দেশটির নৌবাহিনী। ওই ঘটনায় এখনও ১৩ বাংলাদেশি নিখোঁজ রয়েছে। তারা সবাই লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করছিলেন।
চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত লিবিয়ার কোস্টগার্ড ৯ হাজার ২১৬ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাওয়ার সময় উদ্ধার করে। গত বছরের একই সময়ে উদ্ধার হয়েছিল সাত হাজারেরও বেশী। গত সোমবার (৭ জুন) ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বরাষ্ট্রবিষয়ক কমিশনার ইলভা জোহানসনের সঙ্গে বৈঠকে এ তথ্য জানিয়েছেন লিবিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খালিদ তিযানি মাযান।
গত বৃহস্পতিবার ত্রিপোলি সফররত ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা সচিব বেন ওয়ালেশের সঙ্গে বৈঠকে লিবিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খালিদ তিযানি মাযান বলেন, বর্তমানে লিবিয়ায় বিভিন্ন দেশের প্রায় ৭ লাখ অভিবাসনপ্রত্যাশী রয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী হাইকমিশন ইউএনএইচসিআরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত প্রায় ১১ হাজার অভিবাসী ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছেছেন, যা গত বছরের তুলনায় ৭৩ শতাংশ বেশি।
এছাড়া, গত জানুয়ারি থেকে গত ২১ মে পর্যন্ত ৭০০ এরও বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন। গত বছর মৃতের সংখ্যা ছিল ১,৪০০।