এক বোতল পানি কিনতে হচ্ছে চার হাজার টাকায়, এক প্লেট ভাত আট হাজার টাকায়। কোনো পাঁচতারকা হোটেল নয়, কাবুল বিমানবন্দরে এখন এমনই খাবারের দাম। বিদেশি বিমানে দেশ ছেড়ে পালাতে হাজার হাজার মানুষ সেখানে ভিড় করেছেন। তারাই শেষ সম্বল খরচ করে পেটে খাবার দিচ্ছেন, তৃষ্ণা মেটাচ্ছেন।
গত ১৫ আগস্ট তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর থেকে আফগানিস্তান থেকে পালাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। বিভিন্ন দেশ তাদের দূতাবাস কর্মীদের ইতোমধ্যে সরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু আফগান নাগরিকদের কী হবে? সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে উঠেছে।
উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে, কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিতরে ও বাইরে বহু মানুষ জড়ো হয়েছেন। যেভাবে হোক দেশ ছাড়তে তারা মরিয়া। বিমানবন্দরেই নারী ও শিশুদের নিয়ে থাকছেন মানুষ। কেউ কেউ দু-তিনদিন টানা অপেক্ষা করছেন কিন্তু বিমানে ওঠার সুযোগ এখনও পাননি। আর এর ফলে কাবুল বিমানবন্দরে পানি ও খাবারের ব্যাপক অভাব। অনেক খোঁজাখুজির পর খাবার কিংবা পানি পাওয়া গেলেও আকাশছোঁয়া দাম দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
আরও পড়ুন- অপুষ্টি আর বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুঝুঁকিতে ১০ লাখ আফগান শিশু
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে কাবুল বিমানবন্দরে অপেক্ষারত এক নারী জানান, এক বোতল পানির জন্য খরচ করতে হচ্ছে ৪০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় সাড়ে ৩ হাজার টাকা। আর এক প্লেট ভাতের দাম চাওয়া হচ্ছে ১০০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৮ হাজার টাকা।
এদিকে, বিমানবন্দরে চলছে না আফগান আফগানি বা আফগানিস্তানের মুদ্রা। নগদে দাম মেটাতে হচ্ছে আমেরিকান ডলারে। ফলে দেশ ছাড়তে চাওয়া মানুষের সমস্যা আরও বেড়েছে।
খাবার পানির অভাব এতই প্রকট যে বিমানবন্দরে দায়িত্বরত বিদেশি সৈনিকরা নিজেদের জন্য রাখা পানি শিশুদের খাওয়াচ্ছেন। সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে অনলাইনে।
অন্যদিকে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, প্রতি দুজন আফগানবাসীর মধ্যে একজন অভুক্ত। অর্থাৎ আফগানিস্তানের প্রায় দেড় কোটি মানুষ এই মুহূর্তে খাবার পাচ্ছেন না। সে দেশে ২০ লাখ শিশু ভয়াবহ অপুষ্টির শিকার।