সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগির ছেলের সঙ্গে সৌদি যুবরাজের করমর্দনের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। খাশোগির সন্তানদের সমবেদনা জানানোর জন্য রাজদরবারে ডাকা হলেও তার বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা যথারীতি জারি রাখায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে ছবিটিকে লোক দেখানো এবং যুবরাজের ভন্ডামি বলে আখ্যা দিয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের আক্টিভিস্ট, আইনজীবী এবং সাংবাদিকেরা।
এর আগে গত মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) বাদশাহ সালমান ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান রাজপ্রাসাদে খাশোগির দুই ছেলে সালাহ ও সাহেলকে অভ্যর্থনা জানান। এসময় বাদশাহ এবং যুবরাজ খাশোগির মৃত্যুতে তাদের সমবেদনা জানান।
তুরস্কের সৌদি কনস্যুলেটে খাশোগি নিহত হবার পর থেকেই এই ইস্যুতে চাপের মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব। এরই প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবারের খাশোগির সন্তানদের সাথে সৌদি যুবরাজের সাক্ষাতের একটি ছবি প্রকাশ করে সৌদি সরকার।
উল্লেখ্য, ওয়াশিংটন পোস্টে খাশোগি যুবরাজের সমালোচনা করে লিখতে শুরু করার পর থেকেই খাশোগির ছেলেদের উপর বিদেশ ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এমনকি, রাজদরবারে বাদশাহ সালমান এবং যুবরাজের সাথে দেখা করার পরও তাদের সেই নিষেধাজ্ঞা বহাল আছে বলে এপির একটি খবরে বলা হয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ছবিটি প্রকাশ পাওয়ার সাথে সাথেই এই ছবি নিয়ে টুইটারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সাংবাদিক, অ্যাক্টিভিস্ট এবং আইনজীবীরা।
২০১১ সালে সৌদি আরবেনারীদেরগাড়িচালানোরঅধিকারপ্রশ্নেআন্দোলনেরসূচনাকারী মানাল আল শরিফ টুইটারে লিখেছেন, “‘সমবেদনা গ্রহণ করার জন্য তাদেরকে রাজদরবারে নিয়ে আসা হয়েছে। তার চেহারার দিকে তাকিয়ে দেখুন। ছবিটি দেখে আমার চিৎকার করতে ও বমি করে দিতে ইচ্ছে করছে”।
আল-জাজিরার সংবাদকর্মী কামাল সান্তামারিয়া লিখেছেন, “বাম পাশে, জামাল খাশোগির ছেলে সালাহ, ডানপাশে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এটা কতটা বেদনাদায়ক তা কি আপনারা কল্পনা করতে পারছেন?”
এদিকে মধ্যপ্রাচ্যের মানবাধিকার কর্মী এবং বিশিষ্ট আইনজীবী ফাদি আল কাদি এই ছবিকে নির্মমতার চরম নিদর্শন হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
হাফিংটন পোস্টের ইয়াসির আলী টুইটারে লিখেছেন, “আজ খাশোগির ছেলেকে সৌদি যুবরাজের সঙ্গে কথা বলতে বাধ্য করা হয়েছে। তার মুখের দিকে দেখুন। ভুলে যাবেন না, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এই ছেলের দেশের বাইরে যাওয়ার অধিকার হরণ করে রেখেছে সৌদি আরব”।
উল্লেখ্য, খাশোগির এই দুই সন্তানবাদে তার পরিবারের অন্য সকল সদস্যই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। কিন্তু, সৌদি আরবে বসবাসকারী সালাহ ও সাহেল এর উপর ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি থাকার জন্য বাবার মৃত্যুতেও পরিবারের অন্য সবার সাথে দেখা করার সুযোগ পাচ্ছেনা।