উচ্চ আদালতে ধর্ম অবমাননার দায়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বাতিল হওয়ার এক সপ্তাহ পর ৮ বছর পর কারাগার থেকে মুক্ত হলেন আসিয়া বিবি। গত বুধবার রাতে তাকে কারগার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বল জানিয়েছেন তার আইনজীবী সাইফ মুলুক।
কারাগার থেকে মুক্ত করার পর তাকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে একটি প্লেনে করে একটি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে এএফপির একটি খবরে বলা হয়েছে। তবে, নিরাপত্তার খাতিরে তার পরবর্তী গন্তব্য সম্পর্কে কিছুই জানানো হয়নি।
উল্লেখ্য, গ্লাসে পানি খাওয়াকে কেন্দ্র করে ২০০৯ সালে কর্মস্থলে সহকর্মীদের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন খ্রিস্টান ধর্মালম্বী আসিয়া বিবি। পরে তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আনা হয়। পরের বছরেই বিতর্কিত ব্লাসফেমী আইনে প্রথম নারী হিসেবে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয় আসিয়ার। তবে, উচ্চ আদালতে দীর্ঘ আইনি লড়াই চালিয়ে চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন। সুপ্রিম কোর্ট তার মৃত্যুদন্ডাদেশ বাতিল করে। তবে এর পর সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সহিংস বিক্ষোভ শুরু করে পাকিস্তানের কট্টরপন্থী ইসলামিক দলগুলো।
এর প্রেক্ষিতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গতকাল কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে আসিয়াকে সরাসরি মুলতান বিমানবন্দরে নিয়ে একটি ব্যক্তিগত বিমানে তোলা হয়। ওই সময়ে সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হয় কারাগার ও বিমানবন্দরের মধ্যকার রাস্তা।
এর আগে বুধবার সকালে স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়কে আসিয়া বিবিকে মুক্তির নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এরপর কারা কর্তৃপক্ষ আসিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পর তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়।
উল্লেখ্য, নিম্ন আদালতে আসিয়া বিবির মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পর পাকিস্তানসহ সারা বিশ্বে তুমুল সমালোচনা ঝড় শুরু হয়। তবে তার পক্ষে কথা বলায় পাকিস্তানের অন্তত ২ জন নাগরিককে হত্যার শিকার হতে হয়। এমনকি, তৎকালীন পাঞ্জাবের গভর্নর সালমান তাসির আসিয়ার পক্ষে কথা বলায় তাকে হত্যা করে তারই দেহরক্ষী।
এদিকে, পাঞ্জাব গভর্নরকে হত্যাকারীকে বীর হিসেবে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তানে কট্টরপন্থী দল তেহরিক-ই-লাব্বাইক। তারা মৃত্যু দন্ড বাতিল করা তিন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরও মৃত্যুদন্ডাদেশ দেওয়ার দাবী করেছেন।
অন্যদিকে, সহিংস বিক্ষোভের কারণে নিরাপত্তার জন্য পশ্চিমা দেশগুলোতে আশ্রয় চেয়েছেন আসিয়ার স্বামী।