করোনাভাইরাস মহামারির প্রাদুর্ভাবের সময় থেকেই শ্রীলঙ্কা অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে শ্রীলঙ্কা। তার ধারাবাহিকতায় দ্বীপরাষ্ট্রটিতে দেখা দিয়েছে ছাপার কাগজের অভাব। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির প্রধান দুটি সংবাদপত্রের প্রিন্ট সংস্করণ বন্ধ হয়ে গেছে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, সংবাদমাধ্যমের ওপর দেশে চলমান অর্থনৈতিক সংকটের প্রভাব পড়াকেই এ সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে দাবি করছেন মালিকরা।
ব্যক্তিগত মালিকানাধীন সংবাদপত্রগুলো জানিয়েছে, নিউজপ্রিন্ট কাগজের ঘাটতির কারণে তাদের ইংরেজি ভাষার দৈনিক দ্য আইল্যান্ড এবং সিংহলি সংস্করণ ডিভাইনা-এর প্রিন্ট সংস্করণ প্রকাশিত হবে না। যদিও শুধুমাত্র পত্রিকা দুটির অনলাইন সংস্করণ খোলা থাকবে।
খরচ এক তৃতীয়াংশের বেশি বেড়ে যাওয়ার পর এবং বিদেশ থেকে সরবরাহ নিশ্চিত করতে অসুবিধার কারণে গত ৫ মাসে দেশটির অন্যান্য প্রধান জাতীয় দৈনিক সংবাদপত্রগুলো পৃষ্ঠা সংখ্যা কমিয়ে তাদের প্রিন্ট সংস্করণ প্রকাশ করছে।
প্রসঙ্গত, পরীক্ষা নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ ও কালি আমদানি করার মতো যথেষ্ট বৈদেশিক মুদ্রার তহবিল না থাকায় গত সপ্তাহে শ্রীলঙ্কার প্রায় ৪৫ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ৩০ লাখ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছিল।
এদিকে, জ্বালানি তেল সংগ্রহের সারিতে দাড়িয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করার সময় গত সপ্তাহে কমপক্ষে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের জন্য বড় একটি মাধ্যম হলো দেশের পর্যটনক্ষেত্র। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারি চলাকালে দেশটির পর্যটন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই সঙ্গে কমে যায় বিদেশী কর্মীদের রেমিট্যান্সও। ফলে ১৯৪৮ সালে যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছে শ্রীলঙ্কা।
এ বছরের মধ্যে আগের বৈদেশিক ঋণ বাবদ প্রায় ৭০০ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হবে শ্রীলঙ্কাকে। তাই ২ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার দ্বীপরাষ্ট্রটি এ মাসের শুরুতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়েছে। পাশাপাশি ভারত, চীন এবং অন্যান্য দেশের কাছ থেকে আরও ঋণ চাইছে দক্ষিণ এশীয় দেশটি।