নারীরা পোশাকবিধি মানছেন কি-না তা নজরদারিতে স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহারের ঘোষণা দিয়েছে ইরানের কর্তৃপক্ষ। এর মাধ্যমে আইন অমান্যকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া হবে বলে ৮ এপ্রিল ঘোষণা দিয়েছে পুলিশ।
যেসব নারীরা জনপরিসরে পোশাকবিধি মানবেন না, তাদেরকে বিভিন্ন স্থানে বসানো স্মার্ট প্রযুক্তি ও ক্যামেরা দিয়ে চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইরানের পুলিশ। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আইন অমান্যকারীকে ছবিসহ প্রমাণ পাঠিয়ে সতর্কবার্তা এবং পুনরায় আইনভঙ্গের পরিণাম সম্পর্কে অবহিত করা হবে।
ইরানের পুলিশ প্রধান আহমেদ রেজা রাদান রাষ্ট্রীয় টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “পরবর্তী শনিবার থেকে যারা পর্দা করবেন না, তাদের স্মার্ট যন্ত্রের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হবে।”
হিজাব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের কারণে ইরানের ধর্মীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়া এবং নিরাপত্তাহীনতা বেড়ে চলায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে পুলিশ। ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা খবরটি প্রচার করেছে।
সেপ্টেম্বরে পুলিশের হাতে আটক হওয়া ২২ বছর বয়সী কুর্দি তরুণী মাশা আমিনির মৃত্যুর পর ধর্মীয় পোশাকের বাধ্যবাধকতার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন ইরানের নারীরা। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সহিংস উপায়ে সেই আন্দোলন দমন করলেও অনেক নারী এখনও জনপরিসরে পোশাকের বাধ্যবাধকতা না মেনে প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন অনেক ছবি, ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে।
বিবৃতিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদেরকে লক্ষ্য করে বলা হয়েছে, সামাজিক রীতি যথাযথভাবে মানা হচ্ছে কি-না তারা যাতে তা গুরুত্বের সঙ্গে দেখভাল করে।
১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবের পর ইরানে শরিয়াহ আইনে নারীদের পোশাকের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। আইন অনুযায়ী জনসম্মুখে তাদের চুল ঢাকা এবং এমন লম্বা, ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে যাতে শরীরে অবয়ব প্রকাশিত না হয়। আইন অমান্যকারীদের জরিমানা ও গ্রেপ্তারের বিধান রয়েছে।
এদিকে শনিবার নতুন করে আরদাবি শহরের কয়েকটি স্কুলের ছাত্রীরা সন্দেহজনক বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছরের শুরুতেও এমন একাধিক ঘটনায় কয়েকশো শিক্ষার্থী আক্রান্ত হন।