স্থলভাগের সবচেয়ে বড় প্রাণী হাতি। এই প্রাণীর অনন্য এক অঙ্গ শুঁড়। যা দিয়ে মুখে খাবার চালান করা কিংবা ক্ষুব্ধ হয়ে কাউকে শুঁড়ে তুলে নেওয়ার কাজও করে এই প্রাণী। তবে এবার কোনো বিশাল কাজ নয়, বরং সূক্ষ্ম এক কাজ করে আলোচনায় এক হাতি।
সম্প্রতি এক ভিডিওতে দেখা যায়, একটি হাতি শুঁড় দিয়ে কলার খোসা ছড়িয়ে খাচ্ছে।
এতে দেখা যায়, পাং পা প্রথমে শুঁড় দিয়ে কলার এক পাশ ছিন্ন করে। পরে মেঝেতে আছড়ে ফেলে কলার অপর পাশে চাপ দেয়। এতে কলার খোসা খুলে যায়।
জার্মানির বার্লিন চিড়িয়াখানার একটি হাতি এ কাণ্ড দেখিয়েছে।
জার্মানির একদল গবেষক হাতিটিকে খোসা ছিলে কলা খেতে দেখেছেন।
তারা বার্লিন চিড়িয়াখানার ওই হাতির খোসা ছিলে কলা খাওয়ার ভিডিও চিত্র ধারণ করেন।
বিখ্যাত গবেষণা সাময়িকী কারেন্ট জার্নাল–এ প্রকাশিত নিবন্ধে তারা বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।
হাতিটির নাম পাং পা। স্ত্রী এই হাতিকে ১৯৮৭ সালে ছোট্ট অবস্থায় বার্লিনে আনা হয়।
এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
বার্লিনের হামবলট বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোবায়োলজির অধ্যাপক মাইকেল ব্রেখট হাতি কীভাবে শুঁড় নিয়ন্ত্রণ করে তা নিয়ে গবেষণা করেন।
তিনি জানান, বাচ্চা হাতিটির একজন তত্ত্বাবধায়ক এটিকে কলা দেওয়ার সময় খোসা ছাড়িয়ে দিত। এর কয়েক বছর পর পাং ফা নিজেই খোসা ছাড়ানো শেখে ফেলে।
তবে পাং ফা সব ধরনের কলার খোসা ছাড়ায় না। কেবল একটু বাদামি রংয়ের কলাগুলো খোসা ছাড়িয়ে খায় এটি। গবেষকেরা অনেকদিন ধরে সুন্দর হলুদ কলা দিয়েও পাং ফার শুঁড় দিয়ে খোসা ছাড়াতে পারেননি।
বলা বাহুল্য, মানুষের মতো করে টেনে টেনে কলার খোসা ছাড়ায় না হাতিটি। বরং প্রথমে শুঁড় দিয়ে খোসা টেনে ছিঁড়ে এটি, তারপর পুরোপুরি খোসামুক্ত করতে মাটিতে ফেলে কলাটিকে।
তবে হাতিদের অন্য দলের সঙ্গে কলা খাওয়ার সময় খোসা ছাড়ানোর বিলাসিত করে না পাং ফা। তখন যত বেশি পরিমাণে সম্ভব কলা খাওয়ার চেষ্টা করে বুদ্ধিমান এ হাতি।
অধ্যাপক ব্রেখট এ আচরণকে বেশ কৌশলী হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তবে হাতিটি কেন কলার খোসা ছাড়ায়, বা কেন কেবল বাদামি রংয়ের কলারই খোসা ছাড়ায় — তা এখনো পুরোপুরি বুঝতে পারেননি গবেষকেরা।
হতে পারে খোসা ছাড়ালে কলার স্বাদ বেশি লাগে পাং ফার কাছে। আবার এ কথাও নিশ্চিতভাবে বলা যায় না যে মানুষ তত্ত্বাবধায়ক দেখে তাকে অনুকরণের মাধ্যমেই খোসা ছাড়ানো শিখেছে এটি।