গত এক বছর ধরে সঠিক সময়ে ট্রেন চলাচল করছে না। প্রায়ই দেরি করছে পাঁচ মিনিট থেকে আধ ঘণ্টা পর্যন্তও। ট্রেনের দেরি করে আসার এই সময়টাকে কাজে লাগিয়েই উলের স্কার্ফ বুনে একেবারে লাখপতিই হয়ে গিয়েছেন জার্মান এক নারী। নাম তার ক্লদিয়া ওয়েবার।
দেশটির স্থানীয় সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, জার্মানির মিউনিখ শহরের বাসিন্দা ক্লদিয়া ওয়েবার ট্রেন বিলম্বের হিসাব রাখতে অভিনব এক উপায় বের করেছিলেন। বিলম্বের পরিমাণ বোঝাতে বিভিন্ন রং দিয়ে স্কার্ফ বোনা শুরু করেন তিনি৷ বিভিন্ন রঙের উল দিয়ে দেড় মিটার, অর্থাৎ প্রায় ৫ ফুট লম্বা একটি স্কার্ফ বুনে ফেলেন তিনি৷ তারপর সেই স্কার্ফটিই বিক্রির জন্য একটি ই-কমার্স সাইটে নিলামে তোলেন। স্কার্ফটির উলের রঙ বিলম্বের সেই সময়গুলোই নির্দেশ করে বলে জানিয়েছেন ক্লদিয়া ওয়েবারের মেয়ে সারাহ ওয়েবার৷
সারাহ জানান, তার মা যাতায়াতের জন্য সব সময় ট্রেনের মতো গণপরিবহণেই ব্যাবহার করেন৷ কিন্তু ট্রেন আসতে প্রায়ই বিলম্ব হওয়ায় তিনি ভীষণ বিরক্ত হয়ে এক সময় নিজেই হিসাব রাখার একটি অভিনব পদ্ধতি বের করেন। ট্রেন আসতে পাঁচ মিনিট বা তার কম দেরি হলে ধূসর রঙের উলে স্কার্ফ বুনতেন তিনি৷ ৫ থেকে ৩০ মিনিট দেরি হলে স্কার্ফ বুনতেন গোলাপি উলে। আর ট্রেন আসতে বা যেতে উভয় ক্ষেত্রেই দেরি করলে বা ৩০ মিনিটের বেশি বিলম্ব হলে, লাল রঙের উলে স্কার্ফ বুনতেন তিনি৷
স্কার্ফটি বোনা শেষ হয়ে গেলে মায়ের ইচ্ছা অনুযায়ী সারাহ সেটিকে বিক্রির জন্য একটি পোস্ট দেন টুইটারে৷
Meine Mutter ist Pendlerin im Münchner Umland. Und begeisterte Strickerin. 2018 hat sie einen "Bahn-Verspätungsschal" gestrickt. Pro Tag zwei Reihen: Grau bei unter 5 Minuten, rosa bei 5 bis 30 Minuten Verspätung, rot bei Verspätung auf beiden Fahrten oder einmal über 30 Minuten. pic.twitter.com/PpGJiiU8AS
— Sara Weber (@sara__weber) January 6, 2019
কিন্তু তাতে যে এতটা সাড়া পাবেন তা ভাবেননি তিনি৷ নিলামে সেই স্কার্ফ পেতে রীতিমতো দরাদরি চলে আগ্রহীদের মধ্যে। বেশ চড়া দামেই বিক্রি হয়েছে তা। নিলামে এক ক্রেতা সেই স্কার্ফ কিনেছেন ৭ হাজার ৫৫০ ইউরোতে। বাংলাদেশি টাকায় যা ৭ লাখেরও বেশি! সারাহ আরও জানান, তার মায়ের ইচ্ছা নিলামে পাওয়া অর্থ জার্মান রেলওয়ে পরিচালিত দাতব্য সংস্থায় দান করবেন৷
প্রসঙ্গত, ট্রেনের এই দেরি হওয়ার প্রতিকার করতে সম্প্রতি বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে জার্মান রেল। ট্রেন লেটের ঘটনা কমাতে নিয়োগ করা হয়েছে বিশেষজ্ঞদের। জানানো হয়েছে, এখন থেকে অযৌক্তিক কারণে ট্রেনের বিলম্ব হলে চাকরিও যেতে পারে চালকের৷