১৯৮০ সাল থেকে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কোনো আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক নেই। সম্পর্ক না থাকলেও ২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে সরে আসার বিষয়ে একটি চুক্তিতে সই করে। এর মধ্য দিয়ে ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র কিছু নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে।
২০১৮ সালে মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে মাত্রাতিরিক্ত ইউরেনিয়াম সংগ্রহের অভিযোগ তুলে চুক্তি থেকে সরে আসেন। এরপর ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। সে বছরই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলি খোমেইনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ নিষিদ্ধ করেন।
পরবর্তীতে জো-বাইডেন সরকার সেই চুক্তি পুনর্বহাল করেননি। তবে নেপথ্যে ইরানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে যুক্তরাষ্ট্র। সেই “নিরব কূটনীতি”র সুফল হিসেবে ইরানের কারাগারে বন্দি থাকা পাঁচ মার্কিন নাগরিককে কারাগার থেকে সরিয়ে গৃহবন্দি হিসেবে রাখার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) তেহরানের কুখ্যাত এভিন কারাগার থেকে চার মার্কিন নাগরিককে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে একটি হোটেলে স্থানান্তরিত করা হয়। আর অন্য একজনকে এর আগেই গৃহবন্দি হিসেবে স্থান্তর করা হয়েছিল।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এ ঘটনাকে বন্দি ও তাদের পরিবারের দুঃস্বপ্নের অবসান হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ইরান সরকারের এই পদক্ষেপ নেওয়ার পিছনে বেশ কিছু কারণ সামনে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কিছু সুবিধা নিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র। এ নিয়ে দুই দেশের গোপন বৈঠকও হয়েছে।
গোপন আলোচনা সম্পর্কে জানেন এমক কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইরান শর্তসাপেক্ষে ৬০০ কোটি ডলার পেতে পারে। পেট্রোলিয়াম বিক্রির এই অর্থ মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে দক্ষিণ কোরিয়ায় জব্দ করা হয়েছিল। খাদ্য ও ওষুধ কেনার মতো মানবিক প্রয়োজনে ইরান সরকার এই অর্থ ব্যয় করতে পারবে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের সূত্র বলছে, এই অর্থের ছাড়পত্র পাওয়ার পরেই বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে।
ইরান অবশ্য এটিকে বন্দি বিনিময় হিসেবেই ব্যাখ্যা করেছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের দূতাবাস জানিয়েছে, দুই দেশই পাঁচজন করে বন্দিকে ক্ষমা করে মুক্তি দেবে।
অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, সবকিছু ঠিকমতো থাকলে আগামী সেপ্টেম্বর মাসেই মার্কিন বন্দিরা ইরান ত্যাগ করতে পারেন।