রয়টার্সের সবশেষ অনুসন্ধানে প্রথমবারের মত ফাঁস হল রোহিঙ্গা নিধনের নেপথ্য কারিগরদের কথা। জানা গেছে, মিয়ানমারের ৩৩তম ও ৯৯তম পদাতিক বাহিনীই সেখানে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নিধনযজ্ঞে মূল ভূমিকা পালন করেছে।
সেখানকার শীর্ষ সেনাকর্মকর্তা মিং হ্ল্যাং-এর দায়িত্ব ও ক্ষমতার সীমা বিশ্লেষণ করে রয়টার্স দেখিয়েছে, রাখাইনে দুই পতাদিক বাহিনীর ভূমিকা মূলত তারই নির্দেশনার ফলাফল। হত্যাযজ্ঞের আগে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা একটি বৈঠকে রোহিঙ্গা গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে ‘খারাপ লোকদের’ আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তোলে। এরই রেশ ধরে নিধনযজ্ঞের সূচনা। দেশটির সামরিক বাহিনীর পদক্ষেপগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, তারাই ৭ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য করেছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে রাখাইনের উত্তরাঞ্চলীয় গ্রাম ইনদিনে সেনাবাহিনী ও উগ্র বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীরা ১০ রোহিঙ্গাকে গুলি করে হত্যা করে গণকবরে রাখা হয়। ঘটনার সরেজমিন অনুসন্ধানে নামা রয়টার্সের দুই সাংবাদিক ওয়া লোন এবং কিয়াও সোয়ে ও এসব তথ্য ফাঁস করায় ডিসেম্বরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ আনা হয় দাফতরিক গোপনীয়তা ভঙ্গের আইনের আওতায়।
এ বছর ফেব্রুয়ারিতে কর্তৃপক্ষ রয়টার্সকে জানায়, ঘটনার অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তবে কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে রয়টার্সের সাংবাদিকদের দাফতরিক গোপনীয়তা ভঙ্গের সঙ্গে ওই তদন্ত সম্পর্কহীন বলে দাবি করা হয়। সেই তদন্তের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত ৭ সেনাকে এ মাসেই ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সেনা সদস্যদের সাজা ঘোষিত হলেও রয়টার্সের সেই দুই সাংবাদিক দাফতরিক গোপনীয়তার আইন লঙ্ঘনের দায়ে এখনও আটক রয়েছেন। এতো কিছুর পরেও রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ নিয়ে অনুসন্ধান থামায়নি রয়টার্স।