সতর্কতা ছাড়া ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালানো হলে ইসরায়েলি বন্দিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার হুমকি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস।
প্রায় ৩ লাখ রিজার্ভ সৈন্য দিয়ে গাজা ভূখণ্ডকে অবরুদ্ধ করেছে ইসরায়েল। বিদ্যুৎ, খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সেবা থেকে গাজাকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ইসরায়েল গাজায় স্থল অভিযান চালাতে পারে। এ অবস্থায় এমন হুমকি দিলো হামাস।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
হামাসের মুখপাত্র আবু উবাইদা সোমবার হুমকি দিয়ে বলেছেন, সতর্কতা ছাড়া গাজার বেসামরিক বাড়িতে বোমা হামলা চালানো হলে একজন করে ইসরায়েলি বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে তা সম্প্রচার করা হবে।
এই হুমকির বিষয়ে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।
ইসরায়েলি দুর্গ ভেদ করে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী গোয়েন্দাদের ফাঁকি দিয়ে গত ৭ অক্টোবর ভোরে ইসরায়েলে পাঁচ হাজার রকেট ছোড়ে হামাস। হামাসের এই অপ্রত্যাশিত ব্যাপক হামলার শিকার হওয়ার পর তীব্র পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। চলমান এ সহিংসতায় ইতোমধ্যে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো জানিয়েছে, হামাসের হামলায় নিহত ইসরায়েলির সংখ্যা বেড়ে ৯০০ জন হয়েছে আর আহত হয়েছে অন্তত ২৬০০ জন; এছাড়া আরও বহু জনকে ধরে নিয়ে বন্দি করে রাখা হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসের বিরুদ্ধে নৃশংসতার অভিযোগ তুলে যুদ্ধ শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শনিবার থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের আকাশ হামলায় অন্তত ৬৮৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও ৩৭২৬ জন আহত হয়েছেন।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজার যেসব স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে সেগুলোর মধ্যে কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক, একটি মসজিদ ও হাসপাতালও আছে; এর পাশাপাশি কিছু সড়ক ও বাড়িও ধ্বংস হয়েছে। বেসামরিক ফিলিস্তিন টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানির সদরদপ্তরেও বোমাবর্ষণ করেছে ইসরায়েল। এতে গাজার ল্যান্ড টেলিফোন, ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন পরিষেবা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গাজায় ইসরায়েলের হামলা সোমবার রাতেও অব্যাহত ছিল। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা আকাশ ও সাগর থেকে গাজা ভূখণ্ডের বিভিন্ন লক্ষ্যে হামলা চালিয়েছে, এগুলোর মধ্যে ইসলামিক জিহাদের একটি অস্ত্রাগার ও গাজার উপকূলে হামাসের কিছু স্থাপনা ছিল।
ফিলিস্তিনিরা জানিয়েছেন, তারা ইসরায়েলি নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কল ও মোবাইল ফোনে অডিও বার্তা পেয়েছেন, সেগুলোতে তাদের গাজার উত্তরাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের এলাকাগুলো ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছে এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সেখানে অভিযান চালাতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।