যুক্তরাষ্ট্রে ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয় খুলে অবৈধ অভিবাসীদের আটক করেছে দেশটির বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আকৃষ্ট করে এসব অভিবাসীদের ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ভর্তি হওয়া ১৩০ জনকে আটক করেছে যুক্তরাষ্ট্রের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা দপ্তর যার মধ্যে ১২৯ জনই ভারতীয়।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, ২০১৫ সালে কাগজে কলমে ভুয়া এই বিশ্ববিদ্যালয়টি তৈরি করা হয় স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ শেষ হবার পরও যারা যুক্তরাষ্ট্রে থেকে গেছেন তাদেরকে ফাঁদে ফেলে আটক করার উদ্দেশ্যে। এর নাম দেওয়া হয় ইউনিভার্সিটি অফ ফার্মিংটন। কাল্পনিক এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অবস্থান দেখানো মিশিগান অঙ্গরাজ্যে। এতে সফলও হয়েছেন তারা
অবৈধ অভিবাসীদের ধরার উদ্দেশ্যে অনেক কম খরচে শিক্ষার সুযোগ দিয়ে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির নামে। গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের জন্যে এক বছরে ৮,৫০০ এবং আন্ডার-গ্র্যাজুয়েট ছাত্রছাত্রীদের জন্যে ১১,০০০ ডলার চাওয়া হয় সেখানে। আর নিখুঁত ভাবে সাজানো এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাঁদে পা দিয়ে ধরা পড়েছেন বহু ভারতীয় তরুণ।
তবে, ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত সরকার। এই শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রতারণার শিকার হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভারতীয় কর্মকর্তারা। শনিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিল্লিতে মার্কিন দূতাবাসের কাছে এই গ্রেফতারের প্রতিবাদ ও তাতে উদ্বেগ জানিয়ে গ্রেফতারকৃতদের সাথে যোগাযোগের জন্যে কনস্যুলার এক্সেস (দেখা করার অনুমতি) দাবি করেছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, "এই সব শিক্ষার্থীর মর্যাদা ও তারা কেমন আছে সেটা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। একারণে খুব দ্রুত তাদের সঙ্গে আমাদের কর্মকর্তাদের যোগাযোগ করতে দেওয়া উচিত।"
এছাড়াও, শিক্ষার্থীরা কিভাবে কোথায় ভর্তি হয়েছিল এবং তাদের পরিচয় কী- এবিষয়ে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিস্তারিত তথ্যও জানতে চেয়েছে। একই সাথে দাবি জানিয়েছে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়ারও।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট সরকারি জানিয়েছেন, ভুয়া এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ভর্তি হয়েছেন তারা বিজ্ঞাপনে দেখানো সুবিধাগুলো অবৈধ জানার পরও এইখানে ভর্তি হয়েছেন, তাই তারা অপরাধীর পর্যায়ে পড়েন। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা শেষ পর্যন্ত আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে তাদেরকে নিজেদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে, তাদেরকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভারতে ফেরত না পাঠানোর জন্যে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে বারাক ওবামার শাসনামলেও নিউ জার্সিতে একই ধরনের একটি ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয় খুলে ২১ জনকে আটক করা হয়েছিল যাদের বেশিরভাগই ছিল চীনা ও ভারতীয়।