ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনে ৬,০০০ এরও বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এখনো হামলা অব্যাহত রয়েছে। এ অবস্থায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ডে গাজাকে শিশুদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক জায়গা হিসেবে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেছেন, “শিশু হওয়ার জন্য গাজা উপত্যকা হলো বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক জায়গা। গাজায় শিশুদের ওপর সংঘটিত সহিংসতার প্রভাব বিপর্যয়কর, নির্বিচার এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ।”
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ক্যাথরিন রাসেল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, “গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ৫,৩০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সর্বশেষ এই যুদ্ধের প্রকৃত মূল্য পরিমাপ করা হবে সহিংসতায় যারা নিহত হয়েছে এবং যুদ্ধের জেরে যাদের জীবন চিরতরে পরিবর্তিত হয়েছে তাদের সংখ্যা দিয়ে। চলমান এই যুদ্ধের সমাপ্তি এবং সম্পূর্ণ মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার ছাড়া এই সংখ্যা কেবলই দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকবে।”
ক্যাথরিন রাসেল গত সপ্তাহে গাজা পরিদর্শন করেন। গত ৭ অক্টোবর থেকেই ইসরায়েল গাজায় আকাশ থেকে বোমাবর্ষণ করছে, অবরোধ আরোপ করে রেখেছে এবং সৈন্য ও ট্যাংক নিয়ে স্থলপথেও আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে।
ইসরায়েল বুধবার হামাসের সঙ্গে চার দিনের জন্য যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, আগামী চার দিনের মধ্যে ৫০ জন বন্দি মুক্তি পাবে এবং এ সময়টিতে লড়াই স্থগিত থাকবে।
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “এরপর অতিরিক্ত প্রতি দশজন বন্দির মুক্তির জন্য এক দিন করে যুদ্ধবিরতি বাড়বে।”
অন্যদিকে জাতিসংঘের নারী নির্বাহী পরিচালক সিমা বাহাউস ১৫ সদস্যের এই নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, “গাজার নারীরা আমাদের বলেছেন, তারা শান্তির জন্য প্রার্থনা করছেন। কিন্তু যদি শান্তি না আসে, তাহলে তারা তাদের ঘুমের মধ্যে, তাদের সন্তানদের কোলে নিয়ে দ্রুত মৃত্যুর জন্য প্রার্থনা করছেন। এটা আমাদের সকলের জন্য লজ্জা যে, মায়েরা এখন বিশ্বের কোনো এক জায়গায় এমন প্রার্থনা করছেন।”
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। ফিলিস্তিনি সরকারের তথ্যানুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় সাড়ে ১৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৬,০০০ এর বেশি শিশু ও ৪,০০০ এর বেশি নারী। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৩০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।