মিয়ানমারে ৯,৬৫২ বন্দীকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে জান্তা সরকার। বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) দেশটির স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপনের অংশ হিসেবে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
২০২১ সালে মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখলকারী সেনাবাহিনী সম্প্রতি উত্তরাঞ্চলের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়েছে।
বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর একটি জোট ইতিমধ্যে বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি ও মিয়ানমারের সঙ্গে চীনের বাণিজ্যপথের উল্লেখযোগ্য অংশ দখল করে নিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে একটি চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য অত্যাবশ্যক সামরিক অবস্থান ও সীমান্ত কেন্দ্র দখল করেছে। যা জান্তার জন্য একটি বড় হুমকি তৈরি করেছে।
আগের বছর মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়েছিল। এরপর জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং ভাষণ দেন।
তবে এ বছর জান্তাপ্রধান অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন। তার অধীনস্থ এক কর্মকর্তা জান্তাপ্রধানের পক্ষে বক্তব্য পড়ে শোনান।
বৃহস্পতিবার জান্তা সরকারের স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিলের এক বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের ৭৬তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে তারা বিভিন্ন কারাগারের ৯,৬৫২ বন্দীর জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে।
মুক্তি পেতে যাওয়া বন্দীদের মধ্যে কোনো রাজনৈতিক বন্দী আছেন কি না, তা বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়নি।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনের ইনসেইন কারাগারের বাইরে বন্দিদের মুক্তির অপেক্ষায় বহু মানুষ জড়ো হয়েছেন।
তবে এখনো যারা বন্দি আছেন তাদের মধ্যে দেশটির সাবেক নেত্রী ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী অং সান সু চিও আছেন। উত্তেজনা ছড়ানো, নির্বাচনে কারচুপি থেকে শুরু করে দুর্নীতির মতো বিভিন্ন অপরাধের দায়ে তার ২৭ বছর কারাদণ্ড হয়েছে। সু চি সব অভিযোগ অস্বীকার করে তার দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন।
স্বাধীন আদালত সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া মেনেই তাকে সাজা দিয়েছে বলে দাবি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর।
এক বিবৃতিতে জান্তা সরকার বলেছে, সাধারণ ক্ষমা পাওয়াদের মধ্যে ১১৪ জন বিদেশি বন্দীও আছেন। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও মানবিক দিক বিবেচনায় তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
জেনারেল অং সানের নেতৃত্বে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করে মিয়ানমার।
জেনারেল অং সান মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির বাবা।