পশ্চিম তীর ঘুরে মিশরে পৌঁছেছেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক। গাজার পরিস্থিতিকে জাহান্নামের সঙ্গে তুলনা করে রাফা সীমান্ত ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার দাবি করেছেন তিনি।
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেছেন, মিশর এবং গাজার সীমান্ত রাফা ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা প্রয়োজন। প্রতিনিয়ত সেখান দিয়ে গাজায় ত্রাণ পাঠানোর ব্যবস্থা করা দরকার। গাজার পরিস্থিতি জাহান্নামের মতো। সেখানে মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেওয়া সবচেয়ে জরুরি।
রাফা সীমান্ত যাতে ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে, তার জন্য জার্মানি সবরকম চেষ্টা চালাবে বলে এদিন আশ্বাস দিয়েছেন বেয়ারবক। সীমান্তে প্রতিদিন অন্তত তিন হাজার ট্রাকের লাইন পড়ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। কারণ প্রতিটি ট্রাক খুঁটিয়ে পরীক্ষা করছে ইসরায়েলি সেনা। ট্রাকের ওই লাইন চোখে দেখা যায় না বলে জানিয়েছেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। রাফা সীমান্তে তার অভিজ্ঞতা ভয়াবহ।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনের মতোই বেয়ারবকও গাজায় আরো বেশি মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তবে একইসঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, জার্মানি সব সময় ইসরায়েলের পাশে আছে এবং থাকবে। ঐতিহাসিক কারণেই থাকবে।
ইরানের ওপর চাপসৃষ্টি
এদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্ট ব্লিঙ্কেনকে জানিয়েছেন, পশ্চিম এশিয়ায় উত্তেজনা প্রশমনের জন্য ইরানের ওপর চাপ তৈরি করা জরুরি। লেবানন সীমান্তে ইতিমধ্যেই হেজবোল্লাহর সঙ্গে লড়াই চলছে ইসরায়েলের সেনার। হিজবুল্লাহকে সমর্থন দেয় ইরান। হুতি যোদ্ধাদের প্রতি সমর্থন রয়েছে ইরানের। ফলে উত্তেজনা প্রশমনের জন্য ইরানকেই চাপ দিতে হবে বলে মনে করে ইসরায়েল।
ডাব্লিউএইচও-র বক্তব্য
মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) একটি বৈঠক করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, গাজায় লাফিয়ে বাড়ছে অঙ্গহানির ঘটনা। বোমা-গুলিতে আহত ব্যক্তিরা হাসপাতালে এলে অনেকেরই অঙ্গ কেটে বাদ দিতে হচ্ছে। যদিও ভালোভাবে চিকিৎসা দেওয়া গেলে অনেকেরই অঙ্গ কেটে বাদ দিতে হতো না বলে মনে করছে ডাব্লিউএইচও।
সমস্যা হলো, গাজার হাসপাতালগুলোর পরিস্থিতি ভয়াবহ। বেশ কিছু হাসপাতাল অভিযানের ফলে ভেঙে পড়েছে। হাজার হাজার মানুষ হাসপাতাল চত্বরে আশ্রয় নিয়েছে। যথেষ্ট ওষুধ নেই। চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী কম। এই পরিস্থিতিতে অঙ্গহানি আটকানোর জন্য যে ধরনের অপারেশন করা প্রয়োজন, চিকিৎসকেরা তা করতে পারছেন না। বহু ক্ষেত্রে আহত হওয়ার পর হাসপাতালে পৌঁছাতে পারছেন না রোগীরা। ফলে অঙ্গহানির ঘটনা ঘটছে। বহু শিশুর অঙ্গহানি হচ্ছে বলে এদিন জানিয়েছে ডাব্লিউএইচও।