গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জবাবে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হামলা শুরু করে। এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী ইহুদি-মুসলমান সম্পর্কে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। জার্মানিতে এই ঝুঁকি আরও বেশি, কারণ ইউরোপের মধ্যে জার্মানিতেই সবচেয়ে বেশি ফিলিস্তিনি বাস করেন। এদিকে, জার্মানিতে বসবাসরত ইহুদির সংখ্যা দুই লাখের কম।
সব মিলিয়ে জার্মানিতে প্রায় ৫৫ লাখ মুসলিম বাস করেন, যাদের অর্ধেকের বেশি দেশটির নাগরিক। এছাড়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ৬০ লাখের বেশি ইহুদি হত্যার অনুতাপ থেকে জার্মানির কাছে ইহুদিরা বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে থাকেন।
জার্মান রাজনীতিবিদরা মনে করেন, ইসরায়েলের নিরাপত্তা ও ইহুদিদের জীবনরক্ষা একসঙ্গে জড়িত। হলোকস্ট থেকে বেঁচে ফেরা ব্যক্তিরা যেন হামাসের হামলার প্রভাবের সঙ্গে লড়তে পারেন সেজন্য জার্মানি সম্প্রতি ২৫ মিলিয়ন ইউরো দিয়েছে।
জার্মানির সেন্ট্রাল কাউন্সিল অব মুসলিমসের মহাসচিব আবদেসসামাদ এল ইয়াজিদি ডিডাব্লিউকে বলেন, ইহুদি ও মুসলমানেরা এই সংঘাতকে খুব আবেগের সঙ্গে নিয়েছে।
‘‘তবে আস্থা তৈরি করা, সমস্যাটি নিয়ে বস্তুনিষ্ঠভাবে তর্ক করা এবং একে অপরের সঙ্গে সম্মানের সঙ্গে আচরণ করা সম্ভব,” মনে করেন তিনি।
জার্মানির সেন্ট্রাল কাউন্সিল অব জুইশ ২০২২ সালে একটি কর্মসূচি চালু করেছিল। এর আওতায় জার্মানিতে খ্রিস্টান, ইহুদি ও মুসলমানদের জীবনে বাস্তবতা নিয়ে গবেষণা করা হয়। ৭ অক্টোবরের হামলার পর ইহুদি ও মুসলমানদের মধ্যে আলোচনার বিষয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছিল তারা। এতে সহিংসতার বিষয়টি লুকিয়ে না রেখে নিজেদের মধ্যে খোলা মনে আলোচনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।
জার্মানির ফেডারেল অ্যাসোসিয়েশন অব ডিপার্টমেন্টস ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন অন সেমিটিজমের (আরআইএএস) পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ সালে জার্মানিতে যত ইহুদিবিদ্বেষের ঘটনা ঘটেছে তার মাত্র ১%-এর সঙ্গে ইসলামিস্টরা জড়িত। ৭ অক্টোবরের হামলার পর এক মাসে সেই সংখ্যা বেড়ে ৬% হয়েছিল। তবে এই সময়ে মুসলিমবিদ্বেষী ঘটনাও বেড়ে গিয়েছিল।
সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, জার্মানিতে ইহুদি ও মুসলমান উভয়ের জন্য হুমকি উগ্র ডানপন্থি গোষ্ঠী।