তীব্র জ্বালানি সঙ্কটে মধ্য গাজার আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়েছে। হাসপাতালের কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল না হলে অনেক অসুস্থ ও আহত রোগী নিশ্চিত মৃত্যুর মুখোমুখি হবে।
দেইর এল-বালাহ অঞ্চলের হাসপাতালটি শুক্রবারের প্রথম দিকে ১৫ হাজার লিটার জ্বালানি পেয়েছিল। যা দিয়ে আরও কয়েক দিন কাজ চলবে। তবে তার আগে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হওয়ায় চিকিৎসা কর্মীরা অন্ধকার পরিবেশে কাজ করতে বাধ্য হন। ডাক্তাররা তাদের মোবাইল ফোনের আলো ব্যবহার করে কাজ করেন।
আল-আকসার মেডিক্যাল ডিরেক্টর ইয়াদ আল-জাবরি শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আমাদের কাছে আহতসহ শত শত রোগী ও কিডনি রোগী রয়েছে। তাদের ডায়ালাইসিস চিকিৎসার জন্য বিদ্যুতের প্রয়োজন।”
“বিদ্যুৎ না পেলে সব রোগীরা মারা যাবে। বিশেষ করে যারা আইসিইউ, ইনকিউবেটর ও যারা ডায়ালাইসিস চিকিৎসার ওপর নির্ভর করছেন।”
“হাসপাতালে রোগীদের অপারেশন ও যত্ন নেওয়ার জন্য প্রতিদিন চার হাজার লিটার এর বেশি জ্বালানি প্রয়োজন।”
আল-জাবরি বলেন, “তারা রোগীদের যে কোনো সহায়তা দিতে পারবেন। তবে জ্বালানি ছাড়া তা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে।”
“এখানে আসন্ন সঙ্কটের আগে আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে ৫০ হাজার লিটার জ্বালানি পাঠানোর আহ্বান জানাচ্ছি,” তিনি যোগ করেন।
ইসরায়েলের কয়েক মাস ধরে গাজা অবরোধের ফলে বেশিরভাগ হাসপাতাল হয় ধ্বংস হয়ে গেছে বা পরিষেবার বাইরে চলে গেছে।
আল-আকসাসহ যেগুলো খোলা রয়েছে, রোগীদের উপচে পড়া ভিড়ের মধ্যে ওষুধ এবং জ্বালানি সরবরাহের কারণে সেগুলো সেবা দিতে পেরেছে।
আল-আকসায় হাসপাতালের মুখপাত্র খলিল আল-দেকরান আল জাজিরাকে বলেছেন, “সেখানকার চিকিৎসা কর্মীরা রোগীদের চিকিত্সা করতে সক্ষম হওয়ার জন্য ম্যানুয়ালি কিছু সরঞ্জাম পরিচালনা করেছেন।”
“এই সঙ্কট সর্বত্র। এই সঙ্কটের কারণে আমরা অনেক ভুগছি,” আল-দেকরান বলেছেন।
রাফায় নতুন করে হামলা শুরুর ফলে অসংখ্য মানুষ দক্ষিণ গাজার শহরটি ছেড়ে দেইর আল-বালায় এসেছেন। এ পরিস্থিতিতে হাসপাতাল বন্ধ হলে সঙ্কট আরও ঘনীভূত হবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, দৈনিক ৫ হাজার লিটার জ্বালানির চাহিদার বিপরীতে বুধবার ৩ হাজার লিটার জ্বালানি পেয়েছে হাসপাতালটি।
৬ মে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী রাফা সীমান্ত ক্রসিং অবরুদ্ধ করে ফেলে। এটাই ছিল মিশর থেকে গাজায় জ্বালানি আসার মূল প্রবেশপথ।
গাজার হাসপাতালগুলোকে চালু রাখতে দৈনিক বিশ লাখ লিটার জ্বালানি প্রয়োজন।
কিন্তু ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউর প্রধান ফিলিপে লাজারিনি জানান, ৬ মের পর জ্বালানি আসা প্রায় বন্ধের উপক্রম হয়েছে। জাতিসংঘ রোববার ৭০ হাজার লিটার ও মঙ্গলবার এক লাখ লিটার জ্বালানি পেয়েছে, যা চাহিদার তুলনায় খুবই কম।