মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনিপন্থি বিক্ষোভ দমন করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সম্প্রতি ইহুদিদের একটি দাতাগোষ্ঠীর সঙ্গে সাক্ষাতকালে এমন কথা বলেন তিনি। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
ট্রাম্প বলেন, ‘‘নির্বাচিত হলে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা হবে। আপনারা যদি আমাকে নির্বাচিত করেন, আপনাদের অবশ্যই এটি করা উচিৎ। আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে এগিয়ে নেওয়ার কাজ করব।’’
এপ্রিলের শেষের দিকে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ দমন করায় নিউ ইয়র্ক পুলিশের প্রশংসা করেন সাবেক প্রেসিডেন্ট।
অন্য শহরেও একই কায়দায় বিক্ষোভ দমনের আহ্বান জানান তিনি।
গাজায় ইসরায়েলি যুদ্ধের বিরুদ্ধে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই বিক্ষোভ করছে বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা। আর সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীরা। এই বিক্ষোভ দমনে পুলিশ কঠোর অবস্থান নেয়। গ্রেপ্তার করা হয় দুই হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীকে।
এপ্রিলের মাঝামাঝি কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে গাজা সংহতি ক্যাম্প গড়ে ওঠে। তারা ক্যাম্পাস কর্তৃপক্ষকে ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক বিচ্ছিন্নের আহ্বান জানায়। একই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস এবং অন্যান্য অনেক রাজ্যের ক্যাম্পাসে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে, ফিলিস্তিনিপন্থি বিক্ষোভকারীরা ইহুদি-বিরোধী ভাষা ব্যবহার করছে ও ক্যাম্পাসে একটি অনিরাপদ পরিবেশ তৈরি করছে।
তবে বিক্ষোভকারীরা এই অভিযোগ উড়িয়ে দেয়। তারা দাবি করে, গাজা উপত্যকায় যা ঘটছে তা থেকে জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে।
একটি জরিপের তথ্য বলছে, ৩০ বছরের কম বয়সী মার্কিনীদের অধিকাংশই গাজায় যুদ্ধবিরতি চায়।
এদিকে, গত ১৪ মে ইহুদি আন্দোলনের দাতাগোষ্ঠীদের সঙ্গে বৈঠকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য ইসরায়েলের অধিকারের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেন ট্রাম্প। এর আগে তিনি বলেছিলেন, গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড সঠিকভাবে প্রচার পাচ্ছে না। এ কারণে ইসরায়েল বিশ্ববাসীর সহানুভূতি পেতে ব্যর্থ হচ্ছে।
রক্ষণশীল রেডিও হোস্ট হিউ হিউইটের সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে ট্রাম্প বলেন, “তারা জনসংযোগ যুদ্ধে হেরে যাচ্ছে। তবে তারা যা শুরু করেছিল (হামাস নিধনে হামলা) তা শেষ করতে হবে।”
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর থেকে গাজায় ৩৬ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। আহত ৮১ হাজারের বেশি। নিখোঁজ রয়েছে আরও হাজার হাজার মানুষ। তাদের অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের নেতৃত্বাধীন হামলায় প্রায় ১,১৪০ জন নিহত হওয়ার পর ইসরায়েল অবরুদ্ধ অঞ্চলে আক্রমণ শুরু করে।