ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের বেইত লাহিয়া শহরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে দুইজন স্থানীয় সাংবাদিকও রয়েছেন।
শনিবার (১৫ মার্চ) একটি গাড়িতে ইসরায়েলের হামলায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মিশরে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলার মধ্যেই এই হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। খবর ডনের।
এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ও সহকর্মী সাংবাদিকরা জানান, গাড়িতে থাকা ব্যক্তিরা বেইত লাহিয়ার ‘‘আল-খায়ের ফাউন্ডেশন’’ নামে একটি দাতব্য সংস্থার কাজে নিয়াজিত ছিলেন। হামলার সময় তাদের সঙ্গে সাংবাদিক ও ফটোগ্রাফাররাও ছিলেন।
ফিলিস্তিনি গণমাধ্যমের তথ্যমতে, নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে ৩ জন স্থানীয় সাংবাদিক রয়েছেন। এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনি সাংবাদিক সিন্ডিকেট। এতে সংঘাতের সময় সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে প্রণীত জেনেভা কনভেনশনের লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে সংগঠনটি অভিযোগ করে।
এ ঘটনায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চুক্তি আরও হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, “১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যুদ্ধবিরতি ভেস্তে দিতেই ইসরায়েল এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করে হামাস।”
এ সময় চুক্তি মেনে ধাপে ধাপে যু্দ্ধবিরতির আলোচনায় অগ্রসর হতে ইসরায়েলকে বাধ্য করতে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানায় হামাস। এ সময় বর্তমানে আলোচনার স্থবিরতার জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে দায়ী করে হামাস।
গত ১ মার্চ যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। এ ধাপে ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে আটক কয়েকশ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পেয়েছেন।
চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান মতানৈক্য দূর করে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করার জন্য ছয় সপ্তাহের জন্য প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন উইটকফ।
এরপর শনিবার (১ মার্চ) রাতে মুসলমানদের পবিত্র রমজান ও ইহুদিদের পাসওভার (বসন্ত) উৎসব উপলক্ষে আগামী ছয় সপ্তাহের জন্য ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ সাময়িকভাবে বাড়ানোর বিষয়টি অনুমোদন করে ইসরায়েল সরকার।
তবে এই প্রস্তাব মানতে অস্বীকৃতি জানায় হামাস। হামাদের মুখপাত্র জানায়, তারা চুক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়।
বর্তমানে যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যত নিয়ে কায়রোতে আলোচনা করছে ইসরায়েল ও হামাসের প্রতিনিধি দল। গাজায় পুনরায় হামলা বন্ধে ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা করতে এগিয়ে এসেছিলেন হামাস প্রধান খলিল আল হায়া।
এরপর শুক্রবার স্থায়ী যুদ্ধবিরতির শর্তে ইসরাইলের বংশোদ্ভূত এক মার্কিন সেনা এদান আলেকজান্ডারকে মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা দেয় হামাস।