সম্প্রতি তিস্তা নদীর অববাহিকায় “তিস্তা ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জে” ভারতের সামরিক বাহিনী তাদের “যুদ্ধকালীন প্রস্তুতির অংশ” হিসেবে সম্প্রতি একটি পূর্ণাঙ্গ সামরিক মহড়া সম্পন্ন করেছে। যে জায়গায় মহড়াটি সম্পন্ন হয়েছে, সেটি ভারতের তথাকথিত “চিকেনস নেক” বা শিলিগুড়ি করিডরের খুব কাছেই।
গত বৃহস্পতিবার (৮ মে) থেকে ১০ মে পর্যন্ত এই মহড়াটি সম্পন্ন হয়েছে।
ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সরাসরি যোগাযোগের একমাত্র স্থলপথটি পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি চিকেন’স নেক হয়ে। সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বাংলাদেশকে ভারতের এই অঞ্চলের সাতটি রাজ্যের সমুদ্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে “একমাত্র অভিভাবক” বলে মন্তব্য করেন। আর এর পরপরই চিকেন’স নেক অঞ্চলে সেনা উপস্থিতি বাড়িয়েছে ভারত।
গুয়াহাটিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আজ বলেছেন, “তিস্তাপ্রহার এক্সারসাইজে নদীবিধৌত অঞ্চলের চ্যালেঞ্জিং পরিবেশে বাহিনীর ‘যৌথ কম্ব্যাট স্ট্র্যাটেজি’ এবং (যুদ্ধের) প্রস্তুতি কতটা, সেটাই প্রদর্শিত হয়েছে।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টে তিনি আরও দাবি করেন, “এই মহড়ায় ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র, ট্যাকটিক্যাল ড্রিল ও খুব দ্রুত অভিযান চালানোর ক্ষমতাই আরও একবার ‘ভ্যালিডেট’ (বৈধতা দেওয়া) করেছে- যা তাদের উৎকর্ষ ও আধুনিকায়নের প্রমাণ।”
বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে “তিস্তাপ্রহারে”র যেসব ভিডিও ও ছবি প্রকাশ করা হয়েছে তাতে এই মহড়ায় আর্টিলারি ট্যাংক, হেলিকপ্টার, সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল ও অত্যাধুনিক ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে।
দিল্লিতে সেনাবাহিনীর একটি সূত্র বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, “এই মহড়াকে ঠিক ‘রুটিন এক্সারসাইজ’ বলা যাবে না, কারণ তিস্তার অববাহিকায় এই মাপের সামরিক মহড়া কিন্তু সাম্প্রতিক কালের মধ্যে কখনোই হয়নি।”
লন্ডনভিত্তিক জিওপলিটিক্যাল বিশ্লেষক প্রিয়জিৎ দেবসরকার মনে করছেন, এই সামরিক মহড়ার মধ্যে দিয়ে ওই অঞ্চলের প্রতিবেশী দেশগুলোকে ভারত একটা বার্তা দিতে চেয়েছে।
বিবিসিকে তিনি বলছিলেন, “এর মধ্যে একটা সূক্ষ প্ররোচনার উপাদানও হয়তো আছে, যেটা অবশ্যই বাংলাদেশের মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারকে খুশি করবে না।”