জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের জনসংযোগ শাখার পরিচালক (উপসচিব) লাবণ্য আহমেদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল ও কোরআন খতম অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডে তার বাবার বাড়িতে পরিবার ও স্বজনরা এর আয়োজন করে। এতে পরিবারের সদস্য, নিকট আত্মীয়, সহকর্মী ও বন্ধুরা উপস্থিত ছিলেন।
গত ২৭ অক্টোবর লাশ দেশে আসার পর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর উপস্থিতিতে লাবণ্যের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় সংসদের মন্ত্রী হোস্টেলের মিডিয়া সেন্টারে। অন্যদিকে দ্বিতীয় জানাজা আয়োজন করা হয়েছিল মোহাম্মদপুরের বায়তুস সালাম জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে।
জানাজার নামাজের আগে লাবণ্যের সাহকর্মীরা তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন। এছাড়া উপস্থিত তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে তার মায়ের হয়ে সবার কাছে ক্ষমা প্রর্থনা করেন।
দ্বিতীয় জানাজা সম্পন্ন করার পর তাকে রাজধানীর আজিমপুর গোরস্থানে দাফন করা হয়।
সংসদ সচিবালয়ের পরিচালক লাবণ্য আহমেদের মৃত্যুতে স্পিকারের শোক প্রকাশের পাশাপাশি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছিলেন। এছাড়া লাবণ্যের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং তার শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান স্পিকার।
এছাড়া বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ পাবলিক রিলেশন এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ ও পার্লামেন্ট জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন ও সংসদ সচিবালয়ের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
পাঁচ বছর ক্যান্সারের সঙ্গে লড়ে গত সেপ্টেম্বরে লাবণ্যর বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা হয়। অস্ত্রোপচার পরবর্তী জটিলতায় অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতার একটি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকাকালীন গত ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টা ৫৮ মিনিটে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর।
লাবণ্য আহমেদ পেশাগত জীবনে একজন দায়িত্বশীল, দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে নিজ কর্মক্ষেত্র, গণমাধ্যম এবং তথ্য ও সম্প্রচার ক্ষেত্রে সুপরিচিত ছিলেন। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থেকে আমৃত্যু জনকল্যাণে কাজ করে গেছেন তিনি ।
তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের সংবাদ পাঠের পাশাপাশি অনুষ্ঠান উপস্থাপনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
লাবণ্য আহমেদের বাবা নাসির আহমেদ বেনু বাংলাদেশ আর্মস ডিলার্স অ্যান্ড ইম্পোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এবং তার মা শাহেনশা বেগম বাংলাদেশের ইতিহাসের বরেণ্য দুই ব্যক্তি জহির রায়হান ও শহীদুল্লাহ কায়সার এর বোন।
লাবণ্য ১৯৬৭ সালে পিরোজপুর জেলার বড় মাছুয়া গ্রামের দারোগা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৯৬ সালের জুলাইয়ে সহকারী পরিচালক হিসেবে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের গণসংযোগ অধিশাখায় যোগ দেন।
তার শোক প্রকাশ করেছেন ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীসহ অন্য হুইপরা।
এছাড়া জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের পক্ষে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন সভাপতি এ কে এম জি কিবরিয়াসহ সব সদস্য।