অনেকেরই হঠাৎ করে হাত-পায়ের পেশীতে টান ধরে। শীতে লেপ-কম্বলের থেকে বেরনোর সময় বা অন্য ঋতুতেও সকালে প্রথম হাঁটা শুরু করলেই অনেকের পায়ের শিরায় টান ধরে। কখনও হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎই বেঁকে যায় পায়ের আঙুল। কখনওবা আবার কোমরের পেশীতেও টান ধরে।
আর এই “টান ধরার” নেপথ্যে রয়েছে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা। শরীরে পানির পরিমাণ কমে গেলে এই টান ধরার প্রবণতা বাড়ে। সঙ্গে শুরু হয় তীব্র যন্ত্রণা।
চিকিৎসকদের মতে, গরমে ঘাম হয়ে শরীর থেকে বেশি পরিমাণে পানি বেরিয়ে যাওয়ায় শরীরে পানির ঘাটতি হয়। এতে পেশির স্থিতিস্থাপকতা কমে যায়। বিপরীতদিকে, শীতকালে অনেকে আবার কম পানি পান করেন। এতেও শিরায় টান ধরা বা ক্র্যাম্পের প্রবণতা বাড়ে। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে পানির ঘাটতি পূরণই হতে পারে সবচেয়ে সহজ উপায়।
দীর্ঘমেয়াদে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পানির ঘাটতি পূরণ কার্যকর সমাধান হলেও হঠাৎ এমন অবস্থায় পড়লে কী করবেন? সাধারণত ক্র্যাম্পের বা শিরা টানের সমাধান ঘরোয়া উপায়েই করা ভাল। তবে এতে পরিত্রাণ না মিললে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
শিরায় টান ধরলে যা করবেন-
- হাত-পা-আঙুল বা কোমরে ক্র্যাম্প থেকে মুক্তি পেতে আক্রান্ত স্থানে ও তার চারপাশে আঙুল দিয়ে চাপ দিয়ে ধীরে ধীরে মাসাজ করুন।
- পায়ে ক্র্যাম্পের ক্ষেত্রে মাসাজের পর জায়গাটা একটু স্বাভাবিক হলে খুব হালকা চাপ দিয়ে ধীরে ধীরে স্ট্রেচিং করুন। অন্য কোনো ব্যায়াম এই সময় না করাই ভাল। যে পায়ে টান, সেই পায়ের হাঁটু ভাঙুন। অন্য পা পেছনে টান টান করে ছড়িয়ে দিয়ে টান ধরা পায়ের হাঁটুর ওপর শরীরের ভর ধীরে ধীরে ছাড়ুন।
- থাইয়ের পেশীতে টান লাগলে জায়গাটা নরম করে একটি শক্ত কিছুতে ভর দিয়ে দাঁড়ান। টান ধরা পাকে কোমর অবধি টানটান করুন ধীরে ধীরে।
- কোমর ও পায়ের ক্র্যাম্প হাঁটাহাঁটিতেও কমে। কোমরের টানের ক্ষেত্রে ভাল করে মাসাজ করে করলে ব্যথা কম হয়।
- হট ব্যাগ টান ধরা জায়গায় রাখুন। দশ সেকেন্ড রাখার পর সেখানে বরফ সেঁক দিন। ফের দশ সেকেন্ড পর হট ব্যাগ দিন। এভাবে ঠাণ্ডা ও গরম সেঁক চালিয়ে যান যন্ত্রণ না কমা পর্যন্ত।
- সবশেষে, টান শেষে শরীর স্বাভাবিক হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পেশীর ওপর চাপ পড়ে এমন কাজ করবেন না। কয়েক মিনিট বিশ্রাম নিন।