সেনেগালের উত্তরাঞ্চলীয় উপকূল থেকে ডিঙ্গি নৌকায় চড়েছিলেন খাদি দিয়ের স্বামী। ২০০৬ সালের ঘটনা এটি। উদ্দেশ্য স্পেনে যাওয়া। খাদি দিয়ে আর কোনও দিন আর তার স্বামীর খোঁজ পাননি।
বার্তা সংস্থা এএফপি বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজার হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী অবৈধভাবে উন্নত দেশগুলোতে পাড়ি দিতে গিয়ে সমুদ্রে ডুবে মারা যায়।
ইউরোপ ও আফ্রিকান দেশগুলোর সরকার এদের শনাক্ত করতে হিমশিম খাচ্ছে। নদী ও সাগরের সঙ্গমস্থলে উপকূলীয় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর কথা উল্লেখ করে স্থানীয় ডেপুটি মেয়র আরোনা মায়েল সৌ বলেন, “উঁচু ও শক্তিশালী ঢেউয়ের কারণে অনেক অভিবাসন প্রত্যাশীর লাশ ভেসে যায়।”
তিনি আরও বলেন, পুলিশ ও জেলেদের মাঝে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা সত্ত্বেও সব সময় লাশগুলো সনাক্ত করা সম্ভব হয়না। তাই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে দিয়ের মতো পরিবারের সদস্যরা নিখোঁজ লোকটিকে মৃত ধরে নিয়ে ধর্মীয় আচার পালন করে।
দিয়া নিখোঁজ অভিবাসন প্রত্যাশীদের সহায়তা সংস্থার প্রধান। ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেডক্রস (আইসিআরসি) এই সংস্থাটিকে সাহায্য করছে। রেডক্রস অনলাইনে নিখোঁজদের ছবি দিয়ে তল্লাশিতে সহায়তা করে। অপর গ্রামবাসী সাফিয়েতৌ এনডিয়ায়ে বলেন, তার ভাই ২০০৬ সালে মারা গেছেন। তার পরিবারের কাছে খবরটি পৌঁছায় সাত মাস পরে। কিন্তু সব পরিবার সংবাদ পায় না। তিনি বলেন, “অনেকে এখনও আশা করছেন যে তাদের নিখোঁজ স্বজনরা বেঁচে আছেন।”এই মাসের গোড়ার দিকে জাম্বিয়া থেকে দেড়শ’ আরোহীসহ ছেড়ে আসা একটি একটি ডিঙ্গি নৌকা সেনেগালের রাজধানী ও আটলান্টিক উপকূলীয় বন্দর নগরী ডাকারের তীরে পৌঁছে। সেনেগাল ও মৌরিতানিয়ায়ও সাম্প্রাতিক মাসগুলোতে এমন ঘটনা ঘটেছে। কোনো কোনো সময় মর্মান্তিক নৌকাডুবির ঘটনাও ঘটেছে।
সেইন্ট-লুইসের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, “পানি থেকে উদ্ধার করা লাশগুলো প্রায়ই পচে যায়’ তাই এদের সনাক্ত করা কঠিন। এ ধরনের ক্ষেত্রে তাদেরকে তীরে দাফন করা হয়।”
প্যারিস ভিত্তিক ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেড ক্রসের কর্মকর্তা জোস বারাইবার ডাকারে এক সম্মেলনে নিজ বক্তব্যে বলেন, “বিশ্বব্যাপী বিপুল সংখ্যক অভিবাসন প্রত্যাশী সমুদ্রে ডুবে মারা যায়। কিন্তু তাদের মধ্যে খুব কম লোককেই সনাক্ত করা সম্ভব হয়।”