করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর দিকে কোভিড আক্রান্ত রোগীদের প্রাথমিক লক্ষণ ছিল নাক দিয়ে সর্দি পড়া, ঠাণ্ডা জ্বর, নাকের ঘ্রাণশক্তি চলে যাওয়া ও খাবারের স্বাদ না পাওয়া। পরবর্তীতে রোগের লক্ষণ ক্রমেই কমতে থাকে। আক্রান্ত ব্যক্তির মুখের লালা থেকে টেস্ট করে কোভিড শনাক্ত করা সহজ হয় তাই জ্বর আসলে দেরি না করে টেস্ট করাতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ঘ্রাণশক্তি এবং স্বাদ পরবর্তীতে ফিরে আসলেও দেহের অন্য কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং মস্তিষ্কে এর প্রভাব থেকে যায়।
ভারতের প্রখ্যাত চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস এর মতে কোভিড ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর ঘ্রাণশক্তি সম্পূর্ণরূপে চলে যেতে পারে এবং স্বাদগ্রহণ ও ব্যাঘাত ঘটতে পারে তবে তা ধীরে ধীরে ফিরে ফিরে আসে। স্বাভাবিকভাবেই ঘ্রাণশক্তি চলে গেলে নাক বন্ধ থাকে যার ফলে শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ ও সাময়িক অসুবিধা হয়। তবে মুখের মাধ্যমে গ্রহণ করতে কোন অসুবিধা থাকে না তখন। ৩০% থেকে ৩২% রোগীর ক্ষেত্রে ঘ্রাণশক্তি চলে যায় এবং পরবর্তীতে তবু ফিরে আসে।
স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির স্নায়ুতন্ত্রের ওপর প্রভাব বিস্তার করে যার ফলে সে গন্ধ নিতে পারে না এবং স্বাদ গ্রহণ করতে অসুবিধা হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগীদের দুই থেকে তিন মাস সময় লেগে যায় সম্পূর্ণরূপে ঠিক হতে। ২% থেকে ৩% রোগীদের মধ্যে দেখা যায় এনকেফেলাইটিস অর্থাৎ মস্তিষ্কে প্রদাহ যার ফলে মস্তিষ্কের ভিতরের কোষগুলোতে কোভিদ ভাইরাস এর বিস্তার ঘটে। সাধারণত রক্তের মাধ্যমে শরীরের সমস্ত জায়গায় বিস্তার করতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মস্তিষ্কেও এর অবস্থান পর্যবেক্ষণ করা গিয়েছে।
দেশটির জনস্বাস্থ্য চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, যেকোনও ভাইরাস জ্বরে ঘ্রাণশক্তি চলে যেতে পারে তাই আতঙ্কিত না হয়ে রোগের উপসর্গ দেখেই অনুমান করা উচিত না বরং পরীক্ষা করতে হবে, অনেক ক্ষেত্রে রোগী ভাইরাল ফিভার এ আক্রান্ত হতে পারে। যেকোনো ভাইরাল ফিভারের শুরুতেই স্বাদ এবং গন্ধ চলে যায় এবং নাক বন্ধ থাকতে পারে। ঘ্রাণশক্তি এবং স্বাদ গ্রহণ চলে যাওয়া সাধারণত কেবলমাত্র কোভিদ ১৯ এর লক্ষণ নয় তাই বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে এক্ষেত্রে।