ব্যবসায় টিকে থাকলে হলে গ্রাহকের মন বুঝে চলতে হয় সবার আগে। আর গ্রাহক কি চায় সেটা যে বুঝতে পারে সেই এগিয়ে যায় সবার আগে। গ্রাহকের মন বুঝতে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যায় বিজ্ঞাপন সংস্থা বা পরামর্শ দেয় এমন প্রতিষ্ঠানের কাছে। আর এবার সেই সকল প্রতিষ্ঠানই ব্যবসায়িক বুদ্ধির জন্য ধন্না দিচ্ছে এক অটোচালকের!
অবাস্তব মনে হলেও চেন্নাইয়ের ৩৭ বছর বয়সী আন্না দুরাইয়ের জীবনের গল্প এটা। মাইক্রোসফটের সিইও সত্য নাদেল্লা কিংবা বিজ্ঞাপন জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব প্রহ্লাদ কক্কর অথবা সাংসদ শশী তারু, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে একই মঞ্চে বক্তৃতা দেন আন্না।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রথাগত স্কুল শিক্ষায় দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত উত্তীর্ণ হতে না পারলেও তিনিই এখন ব্যবসায়িক জ্ঞান দিচ্ছেন বড় বড় মাল্টি ন্যাশনাল প্রতিষ্ঠানগুলোকে।৷ মুখিয়ে থাকেন তার মুখের কথা শোনার জন্য।
চেন্নাইয়ের মহাবলীপুরম রোডে ছয় সিটের অটো চালান আন্না। তবে এই ছয় সিটের একটিতে জায়াগা করে নিতে রীতিমতো যুদ্ধ করে স্লট বুকিং করে তারপর ওঠা লাগে।
আর এর কারণ বিভিন্ন ধরনের মনোরঞ্জন সামগ্রী। যদিও আন্না তার অটোর যাত্রীদের সঙ্গে অনর্গল যে কোনও বিষয়ে কথা বলে যেতে পারেন। খেলা হোক বা সিনেমা, রাজনীতি হোক বা স্টিফেন হকিংসের তত্ত্ব, এমনকি অর্থনৈতিক পত্রিকার সাম্প্রতিক সংস্করণ নিয়ে আলোচনাতেও তার জড়তা নেই কোনও।
আন্না তার ছোট্ট অটোতে দেশ-বিদেশের সংবাদপত্র, ম্যাগাজিনের সাথে চা-কফি, হালকা খাবার, ডাবের পানি তো রাখেনই, সেই সাথে রাখেছেন টিভি, ট্যাবলেট৷ ল্যাপটপ এমনকি ওয়াই-ফাই ব্যবস্থা। আর এসকল পরিসেবা বিনামূল্যেই পাচ্ছেন তার যাত্রীরা। করোনাভাইরাস মহামারিতেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে রেখেছেন মাস্ক ও স্যানিটাইজারের ব্যবস্থাও।
আন্না বিভিন্ন বক্তৃতায় একটিই কথায় বলেন, গ্রাহকদের সন্তুষ্ট করাই তার কাছে প্রধান বিষয়। আর সেটা পালন করতেই তিনি এসকল ব্যবস্থা রেখেছেন।
আন্না জানান, প্রতি দিন অন্তত ১০০ যাত্রীকে আনা-নেওয়া করে মাসে গড়ে ১ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা আয় করেন তিনি যার মধ্যে ১৯ হাজার টাকা ব্যয় করেন যাত্রীদের নানা পরিসেবার পেছনে।