পেরুর চুম্বিভিলকাস প্রদেশে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার জন্য এক অদ্ভুত উৎসবের প্রথা চালু আছে। প্রতি বছরের শেষে চুম্বিভিলকাস প্রদেশের বাসিন্দারা জড়ো হন নিজেদের মধ্যে মারপিট করার জন্য। এই মারপিট আবার নামেমাত্র মারপিট নয়। এ হলো পরস্পর বিবাদমান দুইজনের মধ্যে তীব্র লড়াই।
তাদের এই মারপিটের উদ্দেশ্য হলো নতুন বছর শুরু হবার আগেই নিজেদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদের অবসান ঘটানো। তাদের এই উৎসবের নাম 'তাকানাকুয়ি'।
প্রতি বছরের ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন উদযাপন এবং নতুন বছরকে বরণ করে নিতে তাকানাকুয়ি উৎসবের আয়োজন করা হয়। মারপিটের সাথে সাথে তাকানাকুয়ি উৎসবে চলে নাচ, গান এবং মদ্যপানের আসর।
তাকানাকুয়ি উৎসবের এই মারপিটের মাধ্যমে প্রেম-ঘটিত বিবাদ থেকে শুরু করে আর্থিক সমস্যা কিংবা মামলা মোকদ্দমা সব সমস্যার সমাধান করা হয়। অদ্ভুত এই সামাজিক বিচার ব্যবস্থায় জয়-পরাজয় নির্ধারণ করার জন্য একজন রেফারিও থাকেন।
স্থানীয়রা জানান, এই উৎসবের মধ্যে দিয়ে তাদের মধ্যে বিদ্যমান বিবাদের অবসান ঘটে এবং তাদের পারস্পারিক সম্পর্কের উন্নতি ঘটে।
প্রথমে শুধুমাত্র চুম্বিভিলকাস প্রদেশের রাজধানী সান্টো টমাসে এই উৎসবের প্রচলন থাকলেও এখন পুরো চুম্বিভিলকাস প্রদেশ জুড়েই চলে এই বিশেষ উৎসব। তাকানাকুয়ি এখন উঠেছে চুম্বইভিলকাস প্রদেশের অবিচ্ছেদ্য ঐতিহ্য।
পেরুর এই দুর্গম অঞ্চলটিতে মাত্র ৩০০ মানুষের বসবাস হলেও প্রতি বছর এই উৎসবের সময় প্রায় ৩ হাজার মানুষের সমাগম ঘটে।
মারপিটের উৎসব হলেও স্থানীয় মানুষ এই উৎসবকে বলে শান্তির উৎসব। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো দুর্গম চুম্বিভিলকাসে কোন পুলিশ কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নেই এমনকি আলাদা কোন বিচারব্যবস্থা। তাই এই উৎসব ঐ প্রদেশের মানুষদের জন্য আনন্দের পাশাপাশি প্রাশাসনিক গুরুত্বও বহন করে।