শরীর থেকে ক্ষতিকর পদার্থ বের করার পাশাপাশি হজম প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যকৃৎ, যেটিকে আমরা লিভার বলে জানি। খাদ্যাভ্যাস আর দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় তারতম্যের কারণে মানবদেহের যকৃতে বিভিন্ন রোগ বাসা বাঁধে।
বিশেষ করে প্রাত্যহিক জীবনে অনিয়ম, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, শরীচর্চায় অমনোযোগী হওয়া, অতিরিক্ত মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে হতে ফ্যাটি লিভার বা লিভার সিরোসিসের মতো প্রাণঘাতী রোগও। অনেক সময় যকৃতে চর্বি জমে গিয়েও বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হয়।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিজেদের কিছু বাজে অভ্যাস ও ভুলের কারণেই যকৃতে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। এসব ক্ষেত্রে ছোট-বড় সবারই যকৃতের রোগ থেকে মুক্তির উপায় জানতে হবে। যকৃতের সুস্থতার জন্য নিচের পাঁচটি কাজ করা যেতে পারে-
বাড়তি ওজন ঝরানো
যকৃতের সুস্থতার ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় হলো শরীরের বাড়তি ওজন। অতিরিক্ত লাল মাংস, ভাজাপোড়া, প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার ফলে শরীরে ট্রান্স ফ্যাটের মাত্রা বেড়ে যায়। এই ফ্যাট লিভারের জন্য একদমই ভালো না।
যকৃতের সুস্থতার জন্য মানবদেহে কার্বহাইড্রেট-প্রোটিন-ফ্যাটের সঠিক ভারসাম্য থাকা ভীষণ জরুরি। এ কারণে অতিরিক্ত ওজন ঝরাতে হবে। বাড়তি ওজন কমাতে খাওয়াদাওয়া লাগাম টানার পাশাপাশি শরীরচর্চার দিকেও নজর দিতে হবে।
পর্যাপ্ত ঘুম
সারাদিনের কর্মব্যস্ততার পর রাত জাগলে প্রতিদিন তিন থেকে চার ঘণ্টাও ঘুম হয় না। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দীর্ঘ দিন পর্যাপ্ত ঘুম না হলে যকৃতের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। তাই যকৃতের সুস্থতার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম অবশ্যই প্রয়োজন।
বেশি বেশি পানি পান
বেশি বেশি পান করলে শরীর থেকে বিভিন্নভাবে দূষিত পদার্থ বেরিয়ে যায়, যা যকৃতের সুস্থতায় ভূমিকা রাখে। তাই বেশি পানি পানের বিকল্প নেই। দিনে কয়েকবার গরম পানিতে পাতিলেবুর রস দিয়ে খাওয়া যেতে পারে। খাদ্যতালিকায়ও রাখা যায় টক দইয়ের মতো প্রোবায়োটিক।
কফি পান
বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দিনে ৩ কাপ দুধ-চিনিবিহীন কালো কফি খেলে যকৃতের অসুখের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো যায়। কিন্তু তাই বলে আবার অতিরিক্ত কফি খাওয়া যাবে না। কারণ অতিরিক্ত ক্যাফেইন (কফির উপাদান) শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যথানাশক ওষুধ না খাওয়া
সামান্য ব্যথা হলেই অনেকের ব্যথার ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস আছে। কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া ঠিক না। কারণ ব্যথানাশকের মধ্যে কিছু প্যারাসিটামল বা কোলেস্টেরলের ওষুধ যকৃতের ক্ষতির কারণ হতে পারে।