কোষ্ঠকাঠিন্য শব্দটির সঙ্গে সবাই কমবেশি পরিচিত। মূলত, একজন ব্যক্তি যখন সহজে মলত্যাগ করতে পারেন না, সাধারণত এক থেকে দুই দিন পরপর মলত্যাগ করেন এবং মল শুষ্ক ও শক্ত হয়, সে অবস্থাকেই কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয়। অনেকেই আছেন যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন। এজন্য অনেকে ওষুধও সেবন করেন। দৈনন্দিন খাদ্যাভাসে পরিবর্তনের মাধ্যমেও এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলতে পারে।
দুর্বল পাচনতন্ত্রকে কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং সুষম খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে এর সমাধান করা যেতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য মোকাবিলা করার জন্য ভারতীয় পুষ্টিবিদ শিখা গুপ্তা কিছু টিপস দিয়েছেন। চলুন সেগুলোই জেনে নেওয়া যাক-
কেন হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্য
হজমের সমস্যা যেমন পেট ফাঁপা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য বর্তমান সময়ে বেশি দেখা যায়। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এটি সমাধানে সাহায্য করতে পারে। পুষ্টিবিদ শিখা সমস্যাটি সঠিকভাবে মোকাবিলার জন্য নির্দিষ্ট কারণটি বোঝার পরামর্শ দিয়েছেন।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের একটি রিপোর্ট অনুসারে, কোষ্ঠকাঠিন্যের কিছু প্রধান কারণ হলো ওষুধ, ব্যায়ামের অভাব, পর্যাপ্ত তরল না খাওয়া, খাবারে পর্যাপ্ত ফাইবার না থাকা, ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম, মলত্যাগের তাগিদ উপেক্ষা করা ইত্যাদি। অভ্যাস বা জীবনযাত্রার পরিবর্তন যেমন ভ্রমণ, গর্ভাবস্থা এবং বার্ধক্য, অন্ত্রের কার্যকারিতার সমস্যার মতো বিষয়গুলো কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ হতে পারে।
দ্রবণীয় ফাইবার খান
অনেকেই ভেবে থাকেন ফাইবারজাতীয় খাবার গ্রহণ করলেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে। তবে ভালো ফলাফলের জন্য কোন ধরনের ফাইবার খাওয়া উচিত তা জানা জরুরি বলে মনে করেন শিখা গুপ্তা। তার মতে, দ্রবণীয় ফাইবার গ্রহণ করা উচিত। দ্রবণীয় ফাইবার পানি ধরে রাখে এবং অদ্রবণীয় ফাইবারের তুলনায় মলের মধ্যে আর্দ্রতা এবং বাল্ক যোগ করে। যা এটিকে শুষ্ক এবং কঠিন করে তুলতে পারে।
ম্যাগনেসিয়ামযুক্ত খাবার খান
ম্যাগনেসিয়াম অন্ত্রে পানির পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। যা স্বাভাবিক মলত্যাগে সাহায্য করে। ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্ট ওষুধের দোকানে সহজে পাওয়া যায়। তবে ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাপন বজায় রাখার জন্য পুষ্টির প্রাকৃতিক উৎস বেছে নেওয়াই ভালো। এজন্য প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যোগ করা উচিত।
প্রোবায়োটিক খান
প্রোবায়োটিকসম্পন্ন খাবার হজমে সাহায্য করে। প্রোবায়োটিকগুলো শর্ট-চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে। যা কোলনের পিএইচ মাত্রা কমিয়ে দেয় এবং বিপাক বাড়ায়। এই সমস্ত কারণে অন্ত্রের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়।