শিশুদের মুখ থেকে লালা পড়া একটি সাধারণ ব্যাপার। চার বছর বয়স পর্যন্ত মুখ দিয়ে লালা বের হতেই পারে। কিন্তু বয়স্কদের মধ্যেও ঘুমন্ত অবস্থায় কারও কারও মুখ থেকে লালা পড়তে দেখা যায়। এই লালা থেকে মাথার বালিশ ও কাপড়চোপড়ও ভিজে যায়। লজ্জায় এ নিয়ে কথাও বাড়ান না অনেকে। অথচ ঘুমের অভ্যাসে পরিবর্তন ও কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে ঘুমের সময় লালা পড়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
লালা কেন ঝরে?
মানুষের শরীর প্রতিদিন ১ লিটারের বেশি লালা উৎপাদন করে। আর এটি উৎপাদন করে লালা গ্রন্থি। জেগে থাকা অবস্থায় আমরা সাধারণত লালা ঝরতে দেই না, কারণ তা গিলে ফেলা হয়। পরক্ষণে রক্ত প্রবাহের মাধ্যমে পুনরায় লালা উৎপাদিত হতে শুরু করে। গভীর ঘুমে থাকা অবস্থায় আমরা লালা যেহেতু লালা গিলে ফেলতে পারি না, তাই মুখে লালা জমতে শুরু করে। এক সময় ঠোঁটের কোণ দিয়ে বাইরে ঝরে পড়ে।
মুক্তি পেতে যা করতে হবে
উঁচু বালিশে ঘুমান: ঘুমানোর সময় মাথা যেন দেহের সমতল থেকে খানিক উঁচুতে থাকে। মাথা উঁচুতে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই মুখ বন্ধ হয়ে থাকবে ও লালা পড়া বন্ধ হবে।
চিত হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করুন: কাত হয়ে বা উপুড় হয়ে ঘুমালে মুখ থেকে লালা বের হতে পারে। এর থেকে মুক্তি পেতে চিত হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করুন। রাতে ঘুমের ঘোরেও যেন কাত হয়ে না শোন, সেটাও নিয়ন্ত্রণে আনুন।
মুখ দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া বন্ধ করুন: ঘুমের মধ্যে লালা পড়ার অন্যতম কারণ হলো, নাকের ন্যাসাল সাইনাস বন্ধ বা আটকে থাকা। নাক বন্ধ থাকলে মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার প্রবণতা বাড়ে। এ ক্ষেত্রে সাইনাস প্রতিরোধী উপকরণ ব্যবহার করতে পারেন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ইউক্যালিপটাসের মতো অ্যাসেনশিয়াল তেল ব্যবহার করলে সাইনাস থেকে অনেকটাই রেহাই পাওয়া যায়। ঘুমাতে যাওয়ার আগে উষ্ণ পানি দিয়ে গোসল করে নিলেও উপকৃত হবেন।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াযুক্ত ওষুধ: কোনো কোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে অতিরিক্ত লালা তৈরি হয়। ঠিক কোন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় অতিরিক্ত লালা তৈরি হচ্ছে, তা খুঁজে বের করুন।
ওজন কমিয়ে ফেলুন: সুষম ডায়েট মেনে বাড়তি ওজন কমিয়ে ফেলুন। বাড়তি ওজন কমলে স্লিপ অ্যাপনিয়া দূর হবে, ঘুমের সময় লালা পড়াও বন্ধ হবে। এছাড়া স্লিপ অ্যাপনিয়া থেকে বাঁচতে সিপিএপি থেরাপি গ্রহণ ও ম্যান্ডিবুলার অ্যাডভান্সমেন্ট ডিভাইস ব্যবহার করতে পারেন।