কুষ্টিয়ায় দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। রোববার বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে কুষ্টিয়া জজ কোর্ট চত্বরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা তার ব্যবহৃত ব্যক্তিগত গাড়িটিও ভাংচুর করে। হামলার পর পুলিশ মাহমুদুর রহমানকে একটি এ্যাম্বুলেন্সে উঠিয়ে দেয়।
বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামিমুর রহমান জানান, জামিন মঞ্জুর করার পর থেকে বিক্ষুদ্ধ ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীরা আদালত চত্বরে মাহমুদুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এ সময় তারা মাহমুদুর রহমানের বিচার চেয়ে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মাহমুদুর রহমান সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক এম এম মোর্শেদের এজলাস কক্ষে অবস্থান করেন। এর মধ্যে এজলাস কক্ষ থেকে মাহমুদুর রহমান বের হওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তাকে বহনকরা ব্যক্তিগত গাড়িটি সেখানে দু’বার তাকে নেওয়ার জন্য আসতে গেলে বিক্ষুদ্ধ ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীরা গাড়ি ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে দুপুরে মাহমুদুর রহমান ফেসবুক লাইভে এসে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি সরকারের সমালোচনা করে প্রায় ৪ মিনিট বক্তব্য প্রদান করেন।
ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলার মুখে মাহমুদুর রহমানের গাড়ি। ছবি- প্রতিনিধি
বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারকের এজলাস কক্ষ থেকে সাদা রঙের প্রাইভেট কার নিয়ে জজ কোর্ট চত্বর থেকে যশোরের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার সময় আদালত চত্বরেই বিক্ষুদ্ধ ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীদের হামলার মুখে পড়েন মাহমুদুর রহমান। হামলাকারীরা ইট, পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং লাঠি সোটা নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় মাহমুদুর রহমান গাড়ি থেকে নেমে কুষ্টিয়া জজ কোর্টের পিপি কুষ্টিয়া জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট সামস তানিম মুক্তির চেম্বারে ঢুকে পড়লে বিক্ষুদ্ধ ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কমীরা সেখানেও হামলা চালায় এবং এ্যাডভোকেট মুক্তির কক্ষও ভাংচুর করে। এক পর্যায়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশ রক্তাক্ত অবস্থায় মাহমুদুর রহমানকে উদ্ধার করে একটি এ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেয়।
বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও টিউলিপ সিদ্দিকীকে নিয়ে কটুক্তি করে বক্তব্যে দেয়ায় কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষার গত বছরের ১০ ডিসেম্বর আমার দেশ সম্পাদকের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে বাদী হয়ে মানহানি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় রোববার আমার দেশ সম্পাদক আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিচারক তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করে স্থায়ী জামিন প্রদান করেন।