১০ বছরে মুরাদের সম্পদ বেড়েছে কয়েকগুণ, স্ত্রীর আরও বেশি
২০০৮ সালের নির্বাচনী হলফনামায় ডা. মুরাদ তার আয়ের উৎস দেখিয়েছিলেন কেবল চিকিৎসা পেশা। সে অনুযায়ী, আর কোনো খাত থেকে আয় ছিল না তার
সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান। ছবি: ফেসবুক
বিশ্বজিৎ দেব, জামালপুর
প্রকাশ : ১৭ ডিসেম্বর ২০২১, ০২:৪১ পিএমআপডেট : ১১ মার্চ ২০২২, ১২:০৫ পিএম
১০ বছরের ব্যবধানে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে কয়েক গুণ। এই সময়ে তার স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে আরও বেশি।
জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসন থেকে ২০০৮ ও ২০১৮ সালে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ডা. মুরাদ। দুই দফায় নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া তার হলফনামা বিশ্লেষণে এ তথ্য মিলেছে।
২০০৮ সালের নির্বাচনী হলফনামায় ডা. মুরাদ তার আয়ের উৎস দেখিয়েছিলেন কেবল চিকিৎসা পেশা। সে অনুযায়ী, আর কোনো খাত থেকে আয় ছিল না তার।
চিকিৎসা সেবা দিয়ে তিনি বাৎসরিক ৩ লাখ ৯ হাজার ৬০০ টাকা আয় করেন বলে তথ্য দেন সেবারের হলফনামায়।
১০ বছর পরে ডা. মুরাদের বাৎসরিক আয় বেড়ে হয় ১৪ লাখ টাকা। এবার অবশ্য আয়ের উৎস চিকিৎসা সেবা দেখাননি। আয়ের বেশির ব্যবসা থেকে আসে বলে ২০১৮ নির্বাচনী হলফনামায় লিখেছেন তিনি।
অবশ্য দুই নির্বাচনের হলফনামাতেই মুরাদ নিজের পেশার ঘরে লিখেছেন ‘‘চিকিৎসা’’। পেশার ঘরে কোনো পরিবর্তন না এলেও একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনের হলফনামায় চাকরি থেকে আয়ের ঘরে কোনো অঙ্কই নেই।
সেই অর্থে এই ১০ বছরে চিকিৎসা পেশায় একদিনও অংশ নেননি ডা. মুরাদ। সংসদ সদস্য হওয়ার পর ব্যবসায় মনযোগী হয়ে তার আয় বেড়ে তিনগুণ।
হলফনামায় ব্যবসা থেকে বছরে ১২ লাখ টাকা, বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া থেকে ১ লাখ ২৩ হাজার ২৯৩ টাকা এবং কৃষি থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় দেখানো হয়েছে।
২০০৮ সালের হলফনামা অনুযায়ী, কোনো স্বর্ণালঙ্কার ছিল না মুরাদ বা তার স্ত্রীর। ১৫ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যমানের ৭.৩০ শতক অকৃষি জমির মালিক ছিলেন মুরাদ। কোনো কৃষিজমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট বা প্লট ছিল তার ওই সময়।
সে সময় মুরাদ হাসান তার কাছে থাকা নগদ অর্থের পরিমাণ ২ লাখ ২২ হাজার ২১৩ টাকা বলে উল্লেখ করেন। সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগে দেখানো হয় ৫৪ হাজার ৯২১ টাকা। ৮ লাখ টাকা দামের একটি টয়োটা মাইক্রোবাস আছে বলেও উল্লেখ করেন।
হলফনামায় আরও দেখানো হয়, ৪০ হাজার টাকার টিভি ও ফ্রিজ। পাশাপাশি কম্পিউটার এবং ওভেনসহ আরও ৪০ হাজার টাকার সম্পদ। খাট, সোফা, ডাইনিং সেট, চেয়াল টেবিল ইত্যাদি আসবাবপত্রের দাম উল্লেখ করেন ১ লাখ টাকা।
১০ বছর পর একাদশ সংসদীয় নির্বাচনের হলফনামায় দেখা গেল, কোনো নগদ টাকা হাতে নেই এমপি মুরাদের। তবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ২১ লাখ ২৭ হাজার ৩৫ টাকা সঞ্চয়, শেয়ারে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ, সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৩১ টাকা বিনিয়োগ রয়েছে।
২৫ ভরি স্বর্ণ থাকার তথ্য দেওয়া হয়েছে, যার দাম দেখানো হয় আড়াই লাখ টাকা। আরও দেখানো হয়, ৮০ হাজার টাকা দামের টিভি ও ফ্রিজ এবং লাখ টাকা দামের ল্যাপটপ। আসবাবপত্র ছিল আড়াই লাখ টাকার।
এর বাইরে ৩ লাখ টাকার পিস্তল ও শটগানেরও মালিক তিনি তখন, যা ১০ বছর আগে ছিল না।
এছাড়া, জমি বিক্রি থেকে ২০ লাখ টাকা; পুঁজি হিসেবে ৬ লাখ টাকা এবং ঋণ হিসেবে দেওয়া ১৫ লাখ টাকার হিসাবও তিনি ২০১৮ সালের হলফনামায় দিয়েছেন।
প্রথমবার এমপি হওয়ার সময় কোনো কৃষিজমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট বা প্লট না থাকলেও ২০১৮ সালের হলফনামায় মুরাদ নিজের নামে সরিষাবাড়ির দৌলতপুরে ১০ বিঘা কৃষি জমি এবং ২ কাঠা ও ১.২ বিঘা অকৃষি জমি দেখিয়েছেন। এছাড়া, রাজধানীর পূর্বাচলে ৫ কাঠা জমি থাকার তথ্যও দিয়েছেন, যার দাম ৩৫ লাখ ২৭ হাজার ৯৫০ টাকা।
এই ১০ বছরে ডা. মুরাদের চেয়ে তার স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসানের সম্পদের পরিমাণ বেশি বেড়েছে।
২০১৮ সালের হলফনামায় মুরাদ তার স্ত্রীর নামে ১৫০ ভরি গয়নার তথ্য দিয়েছেন। উৎস হিসেবে দেখিয়েছেন ‘‘পৈত্রিক ও বিয়ে সূত্রে’’।
২০০৮ সালে জাহানারা এহসানের কোনো সঞ্চয় বা বিনিয়োগ ছিল না। কিন্তু ২০১৮ সালে হলফনামায় উল্লেখ করা হয় ৪০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র থাকার তথ্য।
তার স্ত্রীর নামে রাজধানীর পুরানা পল্টনে ছয় তলা একটি বাড়ি হয়েছে। বেইলী হাইটসে (নওশান হাইটস কলোনি) একটি ফ্ল্যাটও হয়েছে তার। এছাড়া মুরাদের ওপর ‘‘নির্ভরশীলদের’’ একজন শান্তিনগরের কনকর্ড টুইন টাওয়ারে একটি ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছেন। এর সবগুলোই দান থেকে পাওয়া বলে মুরাদের ভাষ্য।
ডা. মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনের সংসদে সদস্য। তিনি জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক। তার বাবা অ্যাডভোকেট মতিয়র রহমান তালুকদার ছিলেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ছাত্রজীবনের প্রথম দিকে মুরাদ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের রাজনীতিতে যুক্ত থাকলেও পরে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন।
এ বছরের শেষ দিকে একটি অনলাইন সাক্ষাৎকারে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও তার নাতিকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। বিষয়টি নিয়ে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়। প্রথমে তিনি বক্তব্যে অনড় ছিলেন। এরই মধ্যে অনলাইনে তার একটি কথোপকথনের অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে শোনা যায়, চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহীকে তিনি অশালীন ভাষায় হুমকি দিচ্ছেন। এরপর ৬ ডিসেম্বর তাকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে অনুযায়ী ভুলে ভরা এক পত্র পাঠিয়ে পদত্যাগ করেন। এরপর তিনি দল ও দেশবাসীর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন।
এরপর ৯ ডিসেম্বর তিনি দেশ ছেড়ে কানাডার পথে পাড়ি জমান। কিন্তু দেশটির কর্তৃপক্ষ তাকে ঢুকতে না দিয়ে দুবাইয়ে পাঠিয়ে দেয়। সেখানেও প্রবেশের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ১২ ডিসেম্বর দেশে ফিরে আসেন ডা. মুরাদ।
বিতর্কিত এই সংসদ সদস্যকে ইতোমধ্যে দলের সবগুলো পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
১০ বছরে মুরাদের সম্পদ বেড়েছে কয়েকগুণ, স্ত্রীর আরও বেশি
২০০৮ সালের নির্বাচনী হলফনামায় ডা. মুরাদ তার আয়ের উৎস দেখিয়েছিলেন কেবল চিকিৎসা পেশা। সে অনুযায়ী, আর কোনো খাত থেকে আয় ছিল না তার
১০ বছরের ব্যবধানে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে কয়েক গুণ। এই সময়ে তার স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে আরও বেশি।
জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসন থেকে ২০০৮ ও ২০১৮ সালে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ডা. মুরাদ। দুই দফায় নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া তার হলফনামা বিশ্লেষণে এ তথ্য মিলেছে।
২০০৮ সালের নির্বাচনী হলফনামায় ডা. মুরাদ তার আয়ের উৎস দেখিয়েছিলেন কেবল চিকিৎসা পেশা। সে অনুযায়ী, আর কোনো খাত থেকে আয় ছিল না তার।
আরও পড়ুন- খালেদা-জাইমাকে নিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যে নিন্দার ঝড়
চিকিৎসা সেবা দিয়ে তিনি বাৎসরিক ৩ লাখ ৯ হাজার ৬০০ টাকা আয় করেন বলে তথ্য দেন সেবারের হলফনামায়।
১০ বছর পরে ডা. মুরাদের বাৎসরিক আয় বেড়ে হয় ১৪ লাখ টাকা। এবার অবশ্য আয়ের উৎস চিকিৎসা সেবা দেখাননি। আয়ের বেশির ব্যবসা থেকে আসে বলে ২০১৮ নির্বাচনী হলফনামায় লিখেছেন তিনি।
অবশ্য দুই নির্বাচনের হলফনামাতেই মুরাদ নিজের পেশার ঘরে লিখেছেন ‘‘চিকিৎসা’’। পেশার ঘরে কোনো পরিবর্তন না এলেও একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনের হলফনামায় চাকরি থেকে আয়ের ঘরে কোনো অঙ্কই নেই।
আরও পড়ুন- ডা. মুরাদকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ
সেই অর্থে এই ১০ বছরে চিকিৎসা পেশায় একদিনও অংশ নেননি ডা. মুরাদ। সংসদ সদস্য হওয়ার পর ব্যবসায় মনযোগী হয়ে তার আয় বেড়ে তিনগুণ।
হলফনামায় ব্যবসা থেকে বছরে ১২ লাখ টাকা, বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া থেকে ১ লাখ ২৩ হাজার ২৯৩ টাকা এবং কৃষি থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় দেখানো হয়েছে।
২০০৮ সালের হলফনামা অনুযায়ী, কোনো স্বর্ণালঙ্কার ছিল না মুরাদ বা তার স্ত্রীর। ১৫ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যমানের ৭.৩০ শতক অকৃষি জমির মালিক ছিলেন মুরাদ। কোনো কৃষিজমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট বা প্লট ছিল তার ওই সময়।
আরও পড়ুন- দপ্তরে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ
সে সময় মুরাদ হাসান তার কাছে থাকা নগদ অর্থের পরিমাণ ২ লাখ ২২ হাজার ২১৩ টাকা বলে উল্লেখ করেন। সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগে দেখানো হয় ৫৪ হাজার ৯২১ টাকা। ৮ লাখ টাকা দামের একটি টয়োটা মাইক্রোবাস আছে বলেও উল্লেখ করেন।
হলফনামায় আরও দেখানো হয়, ৪০ হাজার টাকার টিভি ও ফ্রিজ। পাশাপাশি কম্পিউটার এবং ওভেনসহ আরও ৪০ হাজার টাকার সম্পদ। খাট, সোফা, ডাইনিং সেট, চেয়াল টেবিল ইত্যাদি আসবাবপত্রের দাম উল্লেখ করেন ১ লাখ টাকা।
১০ বছর পর একাদশ সংসদীয় নির্বাচনের হলফনামায় দেখা গেল, কোনো নগদ টাকা হাতে নেই এমপি মুরাদের। তবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ২১ লাখ ২৭ হাজার ৩৫ টাকা সঞ্চয়, শেয়ারে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ, সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৩১ টাকা বিনিয়োগ রয়েছে।
আরও পড়ুন- শাকিব খানকে ‘তেলাপোকা’ বলে কটূক্তি করেছিলেন মুরাদ হাসান
২৫ ভরি স্বর্ণ থাকার তথ্য দেওয়া হয়েছে, যার দাম দেখানো হয় আড়াই লাখ টাকা। আরও দেখানো হয়, ৮০ হাজার টাকা দামের টিভি ও ফ্রিজ এবং লাখ টাকা দামের ল্যাপটপ। আসবাবপত্র ছিল আড়াই লাখ টাকার।
এর বাইরে ৩ লাখ টাকার পিস্তল ও শটগানেরও মালিক তিনি তখন, যা ১০ বছর আগে ছিল না।
এছাড়া, জমি বিক্রি থেকে ২০ লাখ টাকা; পুঁজি হিসেবে ৬ লাখ টাকা এবং ঋণ হিসেবে দেওয়া ১৫ লাখ টাকার হিসাবও তিনি ২০১৮ সালের হলফনামায় দিয়েছেন।
আরও পড়ুন- মুরাদ হাসানকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ থেকেও অব্যাহতি
প্রথমবার এমপি হওয়ার সময় কোনো কৃষিজমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট বা প্লট না থাকলেও ২০১৮ সালের হলফনামায় মুরাদ নিজের নামে সরিষাবাড়ির দৌলতপুরে ১০ বিঘা কৃষি জমি এবং ২ কাঠা ও ১.২ বিঘা অকৃষি জমি দেখিয়েছেন। এছাড়া, রাজধানীর পূর্বাচলে ৫ কাঠা জমি থাকার তথ্যও দিয়েছেন, যার দাম ৩৫ লাখ ২৭ হাজার ৯৫০ টাকা।
এই ১০ বছরে ডা. মুরাদের চেয়ে তার স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসানের সম্পদের পরিমাণ বেশি বেড়েছে।
২০১৮ সালের হলফনামায় মুরাদ তার স্ত্রীর নামে ১৫০ ভরি গয়নার তথ্য দিয়েছেন। উৎস হিসেবে দেখিয়েছেন ‘‘পৈত্রিক ও বিয়ে সূত্রে’’।
আরও পড়ুন- মুরাদ হাসানের অশালীন বক্তব্যের ৯৪টি ভিডিও সরিয়েছে ফেসবুক
২০০৮ সালে জাহানারা এহসানের কোনো সঞ্চয় বা বিনিয়োগ ছিল না। কিন্তু ২০১৮ সালে হলফনামায় উল্লেখ করা হয় ৪০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র থাকার তথ্য।
তার স্ত্রীর নামে রাজধানীর পুরানা পল্টনে ছয় তলা একটি বাড়ি হয়েছে। বেইলী হাইটসে (নওশান হাইটস কলোনি) একটি ফ্ল্যাটও হয়েছে তার। এছাড়া মুরাদের ওপর ‘‘নির্ভরশীলদের’’ একজন শান্তিনগরের কনকর্ড টুইন টাওয়ারে একটি ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছেন। এর সবগুলোই দান থেকে পাওয়া বলে মুরাদের ভাষ্য।
ডা. মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনের সংসদে সদস্য। তিনি জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক। তার বাবা অ্যাডভোকেট মতিয়র রহমান তালুকদার ছিলেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ছাত্রজীবনের প্রথম দিকে মুরাদ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের রাজনীতিতে যুক্ত থাকলেও পরে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন।
আরও পড়ুন- কানাডা-দুবাইয়ে ঠাঁই না পেয়ে দেশে ফিরলেন মুরাদ
এ বছরের শেষ দিকে একটি অনলাইন সাক্ষাৎকারে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও তার নাতিকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। বিষয়টি নিয়ে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়। প্রথমে তিনি বক্তব্যে অনড় ছিলেন। এরই মধ্যে অনলাইনে তার একটি কথোপকথনের অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে শোনা যায়, চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহীকে তিনি অশালীন ভাষায় হুমকি দিচ্ছেন। এরপর ৬ ডিসেম্বর তাকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে অনুযায়ী ভুলে ভরা এক পত্র পাঠিয়ে পদত্যাগ করেন। এরপর তিনি দল ও দেশবাসীর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন।
আরও পড়ুন- মুরাদ হাসানের জীবন মাত্র এক সপ্তাহে বদলে গেলো যেভাবে!
এরপর ৯ ডিসেম্বর তিনি দেশ ছেড়ে কানাডার পথে পাড়ি জমান। কিন্তু দেশটির কর্তৃপক্ষ তাকে ঢুকতে না দিয়ে দুবাইয়ে পাঠিয়ে দেয়। সেখানেও প্রবেশের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ১২ ডিসেম্বর দেশে ফিরে আসেন ডা. মুরাদ।
বিতর্কিত এই সংসদ সদস্যকে ইতোমধ্যে দলের সবগুলো পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বিষয়: