সরকার আদালতকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, “ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করতে সরকার বিচার বিভাগকে প্রধান অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। এই বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে তারা জনগণের মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকারগুলো পুরোপুরি হরণ করে নিচ্ছে।”
বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের কারাদণ্ডের প্রতিবাদে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানের রায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “শুধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এ রায় দেওয়া হয়েছে। এ রায় দিয়ে চলমান আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দেওয়া যাবে না।”
ফখরুল আরও বলেন, “শুধু তারেক রহমান নয়, যে জুবাইদা রহমান রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন, তাকেও সাজা দেওয়া হয়েছে। একটি মাত্র লক্ষ্য, আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দেওয়া। যেখানে মামলাই হয় না, সেখানে সাজানো মামলা দিয়ে তাদের এই সাজা দেওয়া হয়েছে।”
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “অস্তিত্ব রক্ষার যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, ঠিক সেই সময় এ আন্দোলনে যিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তার নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এ রায় দেওয়া হয়েছে। তবে এভাবে আন্দোলন কখনই স্তব্ধ করা যাবে না, বন্ধ করা যাবে না। দাবি আদায় না করে জনগণ ঘরে ফিরে যাবে না।”
তিনি বলেন, “প্রথম থেকেই এই সরকার আদালতকে ব্যবহার করে আসছে। এই যে কেয়ারটেকার সরকার ইস্যুটি নিয়ে গভীর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে, সেটিও কিন্তু আদালতকে নিয়ে। বিচারপতি খায়রুল হকের ক্রিমিনাল অফেন্সে অনৈতিকভাবে রায়। তিনি তার রায়ে সংবিধান থেকে কেয়ারটেকার সরকার বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে জাতিকে চিরস্থায়ীভাবে সংঘাতের দিকে নিমজ্জিত করেছেন এবং অনিশ্চয়তার দিকে ঢেলে দিয়েছেন। এই সরকার আদালত, গণমাধ্যম, প্রশাসনসহ রাষ্ট্রযন্ত্রকে পুরোপুরি ব্যবহার করেছে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এই যে সাজা দেওয়া হয়েছে, ইতোমধ্যে জনগণ তার প্রতিবাদ করেছে। রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সমগ্র দেশে প্রতিক্রিয়া হয়েছে। এই রায়ের প্রতিবাদে আমরা (বিএনপি) ৪ আগস্ট সারা দেশে মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বাদজুমা প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণা করছি। ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ এবং ঢাকা জেলার যৌথ উদ্যোগে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ হবে দুপুর ২টায়।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।