আওয়ামী লীগ এই অক্টোবরে আছে, আগামী অক্টোবরেও থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, “বিএনপি নাকি আমাদের তাড়িয়ে দেবে কয়েক দিনের মধ্যে? আমরা অক্টোবরে আছি, আগামী অক্টোবরেও থাকব। কী কারণে ক্ষমতা ছেড়ে দেব? কী কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আবার পুনর্জীবিত করব? কেন শেখ হাসিনাকে সরে যেতে হবে? জনগণ তাকে চায়, বিকল্পভাবে না। সংকটে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো তার সমকক্ষ কেউ নেই।”
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির প্রথম সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির প্রথম সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, “বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চলতে হবে। সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। ঢাউস বা মোটা ইশতেহারের দরকার নেই। মোটা পুস্তক প্রণয়নের দরকার নেই। কারণ বেশি কথা পড়ার সময় কম। অল্প কথার মধ্যে নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করতে হবে।”
তিনি বলেন, “আমাদেরও অ্যাকশনে যেতে হবে। এমন ইশতেহার করতে হবে, যাতে নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞার বিষয় ভাবতে হবে। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব ভাবতে হবে। ২০২৬ সাল, উন্নয়ন শীল দেশে উত্তরণ। সর্বোপরি ২০৪০ সাল আমাদের মাথায় রাখতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়ে গেছে, এখন স্মার্ট বাংলাদেশ করতে হবে।”
নির্বাচনকালীন মন্ত্রীসভার আকার নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “সেটা ঠিক করবেন প্রধানমন্ত্রী। এটা প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। নির্বাচনকালীন সরকার শুধু রুটিন ওয়ার্ক হবে। মেজর পলিসি গ্রহণ করবে না। এটা নতুন কিছু নয়, পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মত রুটিন দায়িত্ব পালন করবে। মেজর পলিসি থাকবে না।”
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা আমাদের নিয়মে চলবো। আমাদের হুমকি দিয়ে লাভ নেই। সামনের নির্বাচন আমরা ফ্রি, ফেয়ার করব। এর বাইরে আমাদের কোনো চিন্তা নেই। যা করব সংবিধান অনুযায়ী। কে নির্বাচনে এলো কে এলো না, এটা আমাদের বিষয় নয়। কে কারে নিষেধাজ্ঞা দিল এটা আমাদের বিষয় নয়। আমরাতো নির্বাচন করতে চাই। যারা বাধা দেবে তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা, হুমকি দিন। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এত মাথা ঘামাচ্ছেন? দুষ্টু ছেলে ইজরায়েলকে থামাতে পারেন না, হাইতির গান ভায়োলেন্স থামাতে পারেন না?”
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার বিষয়টি আগামী নির্বাচনী ইশতেহারে গুরুত্ব দেওয়া হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, “বিগত সময়ের ইশতেহার মূল্যায়ন করে আগামী নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করা হবে।”
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের ইশতেহার তৈরি করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী আওয়ামী লীগমনা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সুশীলদের প্রয়োজনে ডাকা হবে। প্রয়োজনে তাদের সঙ্গে বৈঠক হবে, কথা হবে, তাদের মতামত ও সুপারিশ নেওয়া হবে। এছাড়া মিডিয়ার ব্যক্তিদের কাছ থেকেও ইশতেহার করতে বিভিন্ন সুপারিশ নেওয়া হবে।”
ড. আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ও ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির সদস্য সচিব ড. সেলিম মাহমুদ, অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ড. সাত্তার মন্ডল, ড. বজলুল হক খন্দকার, ড. শামসুল আলম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও ডা. দীপু মনি, শেখর দত্ত, ড. মাকসুদ কামাল, ড. মাহফুজুর রহমান, অধ্যাপক সাদেকা হালিম, সাজ্জাদুল হাসান এমপি, অ্যাডভোকেট তারানা হালিম, ওয়াসিকা আয়েশা খান, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া, জুনায়েদ আহমেদ পলক, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, অধ্যাপক মোহাম্মদ এ আরাফাত, অ্যাডভোকেট সায়েম খান প্রমুখ।