বিএনপিকে আওয়ামী লীগ সহযোগিতা করতে চায় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বাণিজ্যমন্ত্রী আব্দুল জলিলের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়জিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নাসিম বলেন, "আশা রাখুন, সংসদে আসুন, কথা বলুন। আমরা নিশ্চয়ই আপনাদের সহযোগিতা করতে চাই"। এসময় বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্য করে নাসিম আরও বলেন, "প্রেসক্লাবে বক্তৃতা দিয়ে, ব্রিফিং করে আর যাই হোক বাঁচতে পারবেন না, বলে দিলাম"।
বিএনপির নিজেরাই তাদের এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করে নাসিম আরও বলেন, "‘খালেদা জিয়াকে আমরা জেলে রাখতে চাই না। কিন্তু এখানে আইন আদালতের বিষয়, আমরা কী করবো বলুন। তবে আপনাদের দুঃশাসনের জন্য, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচার না করার জন্য, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য, খালেদা জিয়া যে পাপ করেছেন, সেই পাপ ভোগ করছেন"।
তিনি বলেন, "দেশ আজ গভীর ষড়যন্ত্রের মধ্যদিয়ে পার হচ্ছে। নির্বাচনে যারা পরাজিত হয়েছিল, তারা সবসময় ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। আমরা তো চাই নাই, তারা এভাবে পরাজিত হোক। আমরা চেয়েছিলাম পার্লামেন্ট নির্বাচনে জোর প্রতিযোগিতা হোক। আমরা নির্বাচনের দুই মাস আগে থেকে প্রস্তুত ছিলাম— নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে জোর প্রতিযোগিতা হবে। কারণ, এদেশে আওয়ামী লীগের একমাত্র বিরোধী শক্তি হচ্ছে বিএনপি। কিন্তু ষড়যন্ত্র করে, কী কারণে ২৪ ঘণ্টা আগে মাঠ ছেড়ে চলে গেলো, তা আমরা এখনও বুঝতে পারিনি।"
তিনি বলেন, "কামাল হোসেনের মতো ব্যক্তিত্বকে আনা হলো। বড় বড় নেতাদেরকে আনা হলো, একটি প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের জন্য। তাদের প্রার্থী নেতাকর্মীরা প্রস্তুত ছিল । কিন্তু কী কারণে মাঠ ছেড়ে দিলো, তা জানি না। তারা মাঠ ছেড়ে চলে গেলো, আর দুনিয়াজুড়ে মিথ্যা ছড়ালো যে, তাদেরকে মাঠে থাকতে দেওয়া হয়নি। এটা প্রমাণ হয়ে গেছে তারা অসত্য বলেছিল"।
নাসিম বলেন, "আবার যারা নির্বাচনে বিজয়ী হলো, তাদেরকে সংসদে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। তাদেরকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হচ্ছে। তারা আট জন হোক, ১০ জন হোক, পার্লামেন্টে আসুক। তারা আসলে সরকার তো সব সময় আতঙ্কে থাকবে"।
আওয়ামী লীগ নেতা নাসিম বলেন, "আমরা সব সময়ই চাই এদেশে একটি শক্তিশালী বিরোধী দল হোক। বিরোধী দলহীন দেশ আমরা চাই না। আমরা একসময় বিরোধী দল থেকেই ক্ষমতায় এসেছিলাম। ১৯৯৬ সালে আমরা বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করে রাস্তার মাঠ কাঁপিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলাম। আপনারা এ পার্লামেন্টে অংশগ্রহণ না করে, জেনেশুনে ভুল করছেন। আপনারা পার্লামেন্টে আসেন, সরকারের ভুল ধরেন। সরকারকে সঠিক রাখতে আপনাদের পার্লামেন্টে আসা উচিত। মির্জা ফখরুল পার্লামেন্টে আসেন, আমরা নিজেরা স্বাগত জানাবো।"
কণ্ঠশিল্পী রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন— আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, বিএফইউজের সভাপতি মোল্লা জালাল ও মহাসচিব শাবান মাহমুদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা প্রমুখ।