আগুনে পুড়ে মানুষের মৃত্যুর জন্য বর্তমান সরকারকে দায়ী করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, "সরকার দাবি করে, স্যাটেলাইট পাঠিয়ে মহাকাশ জয় করেছে। অথচ মানুষ বাঁচানোর জন্য সেই সরকারের কোনও আগ্রহ নেই। দেশের জনগণ মনে করে, এই আগুনে পুড়ে মানুষের মৃত্যুর দায় শেখ হাসিনা সরকারের। যারা মধ্যরাতে ভোট করে, তারা গণবিরোধীই হয়। সেজন্য মানুষ বাঁচাতে তারা কোনও দায় বোধ করে না।"
শনিবার (৩০ মার্চ) নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় রিজভী বলেন, "এর আগে অগ্নিদগ্ধ হয়ে অসংখ্য মানুষের মৃত্যুর পরও বর্তমান শাসকগোষ্ঠী ফায়ার সার্ভিসকে আধুনিক যন্ত্রপাতিতে সজ্জিত করেনি। যদি করতো, তাহলে আগুনে পুড়ে এতো মানুষের প্রাণ যেতো না।"
দেশে ২২ তলা ভবনে আগুন নেভানোর সরঞ্জাম নেই দাবি করে তিনি বলেন, "দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে বলে আওয়ামী লীগের সপ্তকন্ঠে চাপাবাজি চলছে। আসলে সরকার দুর্নীতির মহাসড়কে হাঁটছে।"
বনানীর বিল্ডিংয়ে আগুন নেভাতে হেলিকপ্টারের সঙ্গে ঝোলানো বালতিতে হাতিরঝিল থেকে পানি নিয়ে যাওয়ার সময় সব পানি ফুটো তলানি দিয়ে ঝরে গেছে বলেও মন্তব্য করেছেন রিজভী। তিনি বলেন, "অথচ উন্নত দেশে আগুন নেভাতে ও মানুষ উদ্ধারে কত আধুনিক সরঞ্জাম ও ব্যবস্থাপনা দেখতে পাওয়া যায়।"
রিজভী বলেন, ‘বিপজ্জনক টিয়ারশেল, স্মোক গ্রেনেড, সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট, গোলমরিচ-স্প্রেসহ নানা ধরনের আধুনিক অস্ত্র নিয়ে আসা হয়েছে। বিএনপিসহ বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য, মানুষ হত্যার জন্য, নিয়ে আসা হয়েছে ৩০ হাজার শটগান। হাজার কোটি টাকা খরচ করে এসব শটগানের জন্য ৩০ লাখ কার্তুজ আমদানি করা হয়। স্বীকারোক্তি আদায় বা নির্যাতনের জন্য আনা হয়েছে ইলেকট্রিক চেয়ার ও ইলেকট্রিক শক দেওয়ার অত্যাধুনিক ডিভাইস। বিরোধী দলের ফোনে আড়িপাতার জন্য বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি নিয়ে আসা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীকে হেলিকপ্টার দেওয়া হয়েছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে।
বিভিন্ন দুর্ঘটনায় প্রতিদিন প্রায় ৫০ জন মানুষের প্রাণ ঝরছে দাবি করে রিজভী বলেন, "আগুন, বেপরোয়া গতির যানবাহন, ফিটনেসবিহীন লঞ্চ ও বাসের কাছে মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। একটা জবাবদিহিহীন সরকার থাকার কারণেই মৃত্যুর মিছিল থামছে না। সুশাসন থাকলে এই অব্যবস্থাপনা চলতো না।"