জামায়াত ইসলামীকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধের সহযোগী ছিল বলে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের করা মন্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল এই নিন্দা প্রতিবাদ জানান।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “জামায়াত নেতাদের যুদ্ধাপরাধের সহযোগী হওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মাহফুজ আলমের বক্তব্য কোনো রাজনৈতিক অসৎ অভিপ্রায় থেকে অথবা কোনো অপশক্তির ইন্ধনে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের অপরিণামদর্শী আকাঙ্ক্ষা থেকে হতে পারে।”
তিনি বিবৃতিতে বলেন, “মাহফুজ আলম জামায়াত সম্পর্কে ভিত্তিহীন ও অসত্য বক্তব্য দিয়ে একটি প্রতিবেশী দেশের গুপ্তচর কারাবন্দী শাহরিয়ার কবিরদের ভাষাতেই কথা বলেছেন। তার স্মরণ রাখা উচিত যে তিনি একটি অরাজনৈতিক অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা। সে কারণে কোনো রাজনৈতিক দলকে টার্গেট করে সমালোচনা ও অসত্য বক্তব্য দেওয়ার কোনো নৈতিক ও বিধিগত অধিকার তিনি রাখেন না। রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে হলে রাজনীতির ময়দানে এসে বক্তব্য দেওয়া সমীচীন।”
বঙ্গবন্ধুর আমলে গঠিত যুদ্ধাপরাধের তদন্ত কমিশনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “মাহফুজ আলমের জানা থাকার কথা, শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে যুদ্ধাপরাধের জন্য যে তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছিল, তাতে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জামায়াতের কারো সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যে কারণে শেখ মুজিব নিজেই সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মুক্তি দিয়েছিলেন এবং আত্মসমর্পণকারী পাকিস্তানি সৈন্যদের ফেরত পাঠিয়ে ওই সমস্যার সমাধান করে গেছেন। জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযম সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েই নাগরিকত্ব ফিরে পান।”
বিবৃতিতে গোলাম পরওয়ার বলেন, “আশা করি আমাদের এই বক্তব্যের পর তার (উপদেষ্টা মাহফুজ) মনের বিভ্রান্তি দূর হবে এবং তার ভিত্তিহীন ও মিথ্যা বক্তব্যের জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করবেন। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন।”
উল্লেখ্য, বুধবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তার ফেসবুকে স্ট্যাটাসে “জামায়াত যুদ্ধাপরাধের সহযোগী ছিল” বলে মন্তব্য করেন।