আওয়ামী লীগের ক্ষমতাচ্যুত নেতাদের পরিচালিত নির্মম দমন-পীড়নকে কারবালায় ইয়াজিদ বাহিনীর করা নিষ্ঠুরতার অনুরূপ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে শনিবার (৫ জুলাই) দেওয়া এক বার্তায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “পতিত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার গত ১৬ বছর ধরে ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে চরম নিপীড়ন ও অবিচারের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিল। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে, জোরপূর্বক গুম করেছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড করেছে, সহিংসতা, অস্থিরতা এবং বিদেশে জনগণের অর্থ পাচার করেছে।”
তারেক বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠিয়েছিল এবং তার যথাযথ চিকিৎসা প্রদান থেকে বঞ্চিত করে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিল। পরবর্তীতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া নিষ্ঠুর আওয়ামী লীগ নেতাদের পরিচালিত নিষ্ঠুর দমন-পীড়ন ছিল ইয়াজিদ বাহিনীর বর্বরতার মতই।”
তারেক বলেন, “ইমাম হোসেন (রা.) এবং তার ঘনিষ্ঠ সাহাবীদের ত্যাগের চেতনায় অনুপ্রাণিত হয়ে দেশে জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত জাতিকে অবিরাম সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “ইমাম হোসেনের বাহিনীর যুদ্ধ আমাদের সর্বদা সকল প্রকার অত্যাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে অনুপ্রাণিত করবে, যাতে এই ধরণের নিষ্ঠুর অত্যাচারীরা আর কখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে।”
বিএনপি নেতা শহিদ হযরত ইমাম হোসেন (রা.), তার শহিদ পরিবারের সদস্য এবং সাহাবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং তাদের বিদেহী আত্মার মুক্তির জন্য প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, “এই দিনে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেন (রা.) কারবালার ভূমিতে অন্যায়, নিপীড়ন ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে শাহাদাত বরণ করেন। এটি শোক, শ্রদ্ধা ও ত্যাগের দিন।”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “পার্থিব অন্যায় ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ইমাম হোসেনের প্রতিবাদ এবং তার ত্যাগ বাংলাদেশ এবং বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের জন্য, সেইসঙ্গে সমগ্র মানবতার জন্য এক গৌরবময় ও কালজয়ী উদাহরণ হয়ে আছে।”
তিনি বলেন, “ইমাম হুসাইন (রা.)-এর বেদনা ও শাহাদাত এবং ইসলামকে সমুন্নত রাখার জন্য তার আত্মত্যাগ বিশ্বজুড়ে মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার এক শক্তিশালী উৎস হিসেবে কাজ করে চলেছে। ‘একই সঙ্গে, এই ঘটনা ঐশ্বরিক ন্যায়বিচার, ধার্মিকতা, ত্যাগ এবং মানবিক মর্যাদার বার্তাও প্রকাশ করে।”
তারেক বলেন, “হযরত হুসাইন (রা.)-এর শাহাদাত অন্যায়, নিপীড়ন এবং স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আদর্শিক সংগ্রামের এক অতুলনীয় উদাহরণ।”
তিনি বলেন, “ইমাম হুসাইনের (রা.) সহযোগীরা ক্ষমতার লালসায় অন্ধ হয়ে ন্যায়বিচার ও মানবতাকে পদদলিতকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। কারবালায় ইমাম হুসাইনের (রা.) অনুসারীদের শাহাদাত বিশ্বজুড়ে নির্যাতিত ও দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে প্রতিটি যুগে এবং প্রতিটি দেশে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে জেগে উঠতে অনুপ্রাণিত করছে।”