আজ শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ে ওয়ানডে সিরিজ। স্বাগতিক বাংলাদেশ আজ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামবে। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২.৩০ মিনিটে ম্যাচটি শুরু হবে।
তবে অন্যান্য সিরিজ থেকে এই সিরিজটি একটু অন্যরকমই। কারণ এই সিরিজে ১১ বছর পর প্রথমবারের মত দলের সেরা খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান এবং তামিম ইকবালকে ছাড়াই খেলতে নামছে টাইগাররা। বিগত কয়েক বছরে এই দুইজনই দলের সেরা পারফর্মার। নয় মাস পর এই সিরিজের মধ্য দিয়ে দেশে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরছে। তবে, সাকিব-তামিম ছাড়া এবারের টাইগাররা একটু কম শক্তিশালী?
ক্যাপ্টেন মাশরাফি বলছেন অন্য কথা। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেছেন, ‘অনেক দিন পর হোমে খেলতে নামছি, আমরা আত্মবিশ্বাসী। সাকিব-তামিম যে থাকবে না, সেটা তো সবাই জানে। ওদের ছাড়া সেরা পারফর্ম করার মতো প্রস্তুতি নিয়েছি আমরা। কাল সবার চাহিদা মতো পারফর্ম করতে চাই।’
সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত ক্লান্তিকর এশিয়া কাপের পর এই সিরিজকে ২০১৯ বিশ্বকাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বিবেচনা করছে মাশরাফিবাহিনী।
সাকিব তামিম না থাকলেও এই সিরিজটাকে নতুন দের জন্য একটি বিশেষ সুযোগ মনে করছে টীম ম্যানেজমেন্ট। এই জন্যই নতুনদের নিয়ে এক ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষা পুরো সিরিজ ধরেই হয়তবা চলতে থাকবে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলবে ব্যাটিং অর্ডারের ৩ নম্বর ও ৭ নম্বর পজিশন নিয়ে। কারণ, ৩ নম্বর পজিশনের নিয়মিত খেলোয়াড় সাকিব চোটের কারণে দলের বাইরে।
তামিম না থাকায় ওপেনিংয়ে নেতৃত্ব দিতে হবে লিটনকে। টপ অর্ডারে নাজমুল হোসেন শান্ত এবং ইমরুল কায়েস ২ ও ৩ নম্বর জায়গা পূরণ করবেন।
৭ নম্বর পজিশনের জন্য সম্ভাব্য খেলোয়াড় হলেন নবাগত ফজলে মাহমুদ রাব্বি কিংবা অলরাউন্ডার পেস বোলার সাইফুদ্দিন। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ম্যাচের আগে পিচের কন্ডিশন দেখে নেওয়া হবে।
এদিকে পেসার রুবেল হোসেন তীব্র জ্বরে ভুগছেন। অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়েছে রুবেলকে। তাকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন টীম ম্যানেজমেন্ট।
ক্যাপ্টেন মাশরাফি যথারীতি বোলিংয়ে নেতৃত্ব দেবেন মুস্তাফিজকে সাথে নিয়ে। রুবেল না খেললে দলে আসতে পারেন পেসার আবু হায়দার।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের রেকর্ড অবশ্য দারুণ। তাদের বিরুদ্ধে গত ১০ টি ম্যাচেই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। তবুও জিম্বাবুয়েকে খাটো করে দেখতে নারাজ ক্যাপ্টেন মাশরাফি।
টাইগার অধিনায়ক কথা বলছিলেন সাংবাদিকদের সাথে। তিনি বলেন, "চ্যালেঞ্জটা তো প্রতি ম্যাচে যেটি থাকে সেটিই। সবার প্রত্যাশা যেটা যে আমরা জিতব, সেটা খুবই স্বাভাবিক। তবে আমার কাছে মনে হয় অন্যান্য দলের বিপক্ষে যে চ্যালেঞ্জটা থাকে, বিশেষ করে শেষ টুর্নামেন্ট, এশিয়া কাপে যে চ্যালেঞ্জটা ছিল, সেটিই থাকবে। জিম্বাবুয়ে দলটিও অভিজ্ঞ। তারা এখানে আগেও অনেকবার খেলেছে। তাই জিততে হলে শতভাগই দিতে হবে।"
অন্যদিকে সফরকারী জিম্বাবুয়ে দলে চুক্তির ঝামেলা কাটিয়ে অনেকদিন পর ফিরছেন সিকান্দার রাজা। এছাড়াও দলে চিগম্বুরা, টেইলর, মাসাকাদজার মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়েরাও রয়েছেন যাদের বাংলাদেশে খেলার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে।
সাম্প্রতিক দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে সব ম্যাচে হারলেও জেতার অনেক সুযোগ তারা তৈরি করেছিলেন। তাই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী সফরকারি দলের অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। তিনি বলেন, "আমরা তাদের বিপক্ষে প্রায়ই খেলি। আমি মনে করি এখনো তাদের বিপক্ষে ভালো সুযোগ আছে। ছেলেরা এখানে খেলার জন্য মুখিয়ে আছে।"
পরিসংখ্যানে বাংলাদেশ বনাম জিম্বাবুয়ে-
বাংলাদেশ বনাম জিম্বাবুয়ে
৪১ ওডিআই ২৮
৫৯.৪২ জয় % ৪০.৫৭
সাকিব(১৪০৪) সর্বাধিক রান টেইলর(১২২২)
সাকিব(৭৪) উইকেট রে প্রাইস (৩৫)
সম্ভাব্য একাদশ:
বাংলাদেশ
লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, ইমরুল কায়েস, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদুল্লাহ, মাশরাফি বিন মোর্তজা (অধিঃ), মেহেদি হাসান, রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, নাজমুল ইসলাম।
জিম্বাবুয়ে
হ্যামিল্টন মাসাকাদজা (অধিঃ), সলোমন মায়ার, ক্রেইগ এরভিন, ব্রেন্ডন টেইলর, শন উইলিয়ামস, সিকান্দার রাজা, পিটার ম্যুর, এলটন চিগুম্বুরা, ডোনাল্ড ট্রিপিয়ানো, ব্র্যান্ডন মাভুতা, টেন্ডাই চাতারা।