আন্তর্জাতিক ফুটবলে টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থেকে কাতার বিশ্বকাপে এসেছিল আর্জেন্টিনা। অন্যদিকে, ধারে-ভারে সবদিকেই আলবিসেলেস্তেদের চেয়ে পিছিয়ে ছিল সৌদি আরব। ম্যাচের আগে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিকে কত গোলের ব্যবধানে হারিয়ে দুইবারের বিশবচ্যাম্পিয়নরা কাতার বিশ্বকাপে শুভসূচনা করবে, সেটিই ছিল সবার প্রশ্ন।
তবে মাঠের লড়াইয়ে দেখা গেলো পুরো বিপরীত চিত্র। মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) কাতারের লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে পিছিয়ে পড়েও আর্জেন্টিনাকে ২-১ গোলে হারিয়ে দিয়েছে সৌদি আরব। লাতিন পরাশক্তিদের বিরুদ্ধে এশিয়ান দেশটির এই অবিস্মরণীয় জয়ের নায়ক দলের গোলরক্ষক মোহাম্মদ আল ওয়াইস।
আর্জেন্টিনার বিপক্ষে আজকের দিনটি যে তার হতে যাচ্ছে, সেটির ইঙ্গিত ম্যাচের শুরুতেই দিয়েছিলেন আল ওয়াইস। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই ডি-বক্সের মাথা থেকে লিওনেল মেসির নেওয়া শট ঠেকিয়ে দেন সৌদি গোলরক্ষক। যদিও মিনিট আটেক পরে আর্জেন্টাইন অধিনায়কের নেওয়া পেনাল্টিতে পরাস্ত হন ৩১ বছর বয়সী এই গোলরক্ষক।

তবে দিনটিকে নিজের করে নিতে বদ্ধপরিকর ছিলেন আল ওয়াইস। প্রথমার্ধে ১-০ গোলে পিছিয়ে থাকলেও মধ্যবিরতির পর আট মিনিটের মাঝে দুই গোল করে এগিয়ে যায় সৌদি আরব। আল ওয়াইসও হয়ত বুঝতে পেরেছিলেন নায়ক হওয়ার এই সুযোগ। সুযোগটিকে নিখুঁতভাবে কাজে লাগাতে ভুল করেননি এই গোলপ্রহরী।
দ্বিতীয়ার্ধের পুরোটা সময় জুড়ে আল ওয়াইস যেন হয়ে উঠছিলেন চীনের প্রাচীর। লিওনেল মেসি, অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া, নিকোলাস টাগ্লিফিয়াকো, জুলিয়ান আলভারেজ- কেউই সৌদি গোলরক্ষকের অতিমানবীয়তার কাছে পাত্তা পাননি। পুরো ম্যাচে আর্জেন্টাইনদের বিরুদ্ধে ৫টি সেভ করেন আল ওয়াইস। এক আল ওয়াইসের কাছেই আর্জেন্টিনা হেরে গেছে বললেও ভুল হবে না। ম্যাচসেরার পুরস্কারও তাই উঠেছে আল ওয়াইসের হাতেই।

পেশাদার ক্যারিয়ারে বর্তমানে সৌদি ক্লাব আল আল হিলালের হয়ে খেলছেন আল ওয়াইস। যদিও ক্লাব ফুটবলের বড় সময়টা পার করেছেন আল-শাবাব ও আল-আহলির হয়ে। ২০১৬ সালের নভেম্বরে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে জাপানের বিপক্ষে মাঠে নামার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ৬ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার এই গোলরক্ষকের অভিষেক। তবে সৌদি আরবের গোলপ্রহরী হিসেবে আর্জেন্টিনার বিপক্ষেই যে ক্যারিয়ারের সেরা পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন, সেটি না বলে দিলেও চলছে।