সন্তান প্রসবের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে জাতীয় নারী দলের ফুটবলার রাজিয়া সুলতানার (২০) মৃত্যু হয়েছে। তিনি অনূর্ধ্ব ১৯ জাতীয় নারী ফুটবল টিমের সদস্য ছিলেন।
বুধবার (১৩ মার্চ) দিবাগত রাত ৩টার দিকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা ইউনিয়নের লক্ষ্মীনাথপুর গ্রামের বাড়িতে তার মৃত্যু হয়।
পরিবারের বরাত দিয়ে কালিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদ মেহেদি জানান, ফুটবলার রাজিয়া সুলতানা দরিদ্র পরিবারের মেয়ে। ১৩ মার্চ রাত ১০টার দিকে তিনি একটি পুত্রসন্তান প্রসব করে। সন্তান প্রসবের পর রাত ৩টার দিকে তার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে থাকে। একপর্যায়ে স্ট্রোক হয়। কালিগঞ্জ হাসপাতালে নেওয়ার পথে ভোর ৪টার দিকে তিনি মারা যান।
চেয়ারম্যান বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ফুটবল প্রতিযোগিতায় সেরা খেলোয়াড় ছিলেন রাজিয়া। পরবর্তীতে জাতীয় নারী ফুটবল দলের অনূর্ধ্ব ১৪ ও অনূর্ধ্ব ১৬ দলের সদস্য হয়ে খেলার সুযোগ হয় তার। সবশেষ অনূর্ধ্ব ১৯ জাতীয় নারী ফুটবল টিমের সদস্য ছিলেন। ভুটানে খেলতে গিয়েছিলেন। কিছুদিন আগে পরিবার থেকে তাকে বিয়ে দেওয়া হয়। আমরা সবাই শোকাহত।
রাজিয়ার খালাত ভাই মো. রোকোনুজ্জামান মোড়ল বলেন, “বুধবার রাতে রাজিয়া গ্রামের বাড়িতে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। এরপর তার কিছু জটিলতা দেখা দেয় এবং ভোর ৪টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। অবস্থা খারাপ হওয়ায় রাতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও রাজিয়াকে বাঁচানো যায়নি।”
রোকনুজ্জামান আরও বলেন, “জটিলতা দেখা দেওয়ার পর রাতে অ্যাম্বুলেন্স আনা হয়েছিল। কিন্তু একটা সময় অবস্থা ভালো হওয়ায় সেই অ্যাম্বুলেন্স ফেরত পাঠানো হয়। এরপর ভোরের দিকে হঠাৎ করেই তার মৃত্যু হয়। এরপর আবার তাকে সাতক্ষীরা হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আজ বৃহস্পতিবার বাদ আসর রাজিয়াকে দাফন করার কথা রয়েছে।”
রাজিয়ার আকস্মিক মৃত্যুতে খুবই ব্যথিত জাতীয় দলের সতীর্থ সানজিদা আক্তার। ভারত থেকে ব্যথিত কণ্ঠে বলেছেন, “আমাদের ক্যারিয়ার একই সময়েই শুরু মূলত। ক্যাম্প থেকে বাদ পড়ার পর ও লিগ খেলেছে এবং পরবর্তীতে বিয়ে করেছে। বাচ্চা হওয়ার পর মারা গেছে শুনে খুবই খারাপ লাগছে। আমরা একজন বন্ধু হারালাম।”