চলমান টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে ৪ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। প্রোটিয়াদের ১১৩ রানে আটকে রাখে বাংলাদেশ। লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ৭ উইকেটে ১০৯ রানে আটকে যায় বাংলাদেশ।
যে পিচে খেলা হয়েছে সেখানে প্রতিটি রানই মূল্যবান। আর সেখানে আম্পায়ারের একটি ভুল সিদ্ধান্তের কারণে চারটি রান থেকে বঞ্চিত হয়েছে বাংলাদেশ।
ঘটনাটি ম্যাচের ১৭তম ওভারের। পেওটনিল বার্টম্যানের বল মাহমুদউল্লাহর পায়ে লেগে চলে যায় বাউন্ডারির বাইরে। এর আগেই অবশ্য এলবিডব্লুর আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। এরপর মাহমুদউল্লাহ রিভিউ নিলে দেখা যায়, বল স্টাম্পে আঘাত করেনি। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত তাই পাল্টে যায়। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী, আম্পায়ার আউট দেওয়ার পর বল ডেড হয়ে যাওয়ায় লেগ বাই হিসেবে ওই ৪ রান পায়নি বাংলাদেশ।
এছাড়াও বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসে আম্পায়ারদের আরও বেশ সিদ্ধান্ত বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তাই আম্পায়ারিং নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বাংলাদেশের হয়ে ম্যাচে সর্বোচ্চ রান করা তাওহিদ হৃদয়।
দুই চার ও ছক্কায় ৩৪ বলে ৩৭ রানের ইনিংস খেলা হৃদয়ের মতে, আরও ভালো আম্পায়ারিংয়ের সুযোগ ছিল। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের লেগ বিফোর (এলবিডব্লু) চার হলে, দুই-তিনটা বল ওয়াইড হতে পারত, তা দিলে; এমনকি তার লেগ বিফোর আউটটা না দিলে তারা জিততে পারত।
ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের হৃদয় বলেন, “সত্যি বলতে, সেটি ভালো সিদ্ধান্ত ছিল না। টাইট ম্যাচে আমাদের জন্য ভালো কিছু ছিল না সেটি। আমার মতে, আম্পায়ার আউট দিয়েছেন, কিন্তু আমাদের জন্য বিষয়টা কঠিন ছিল। ওই চারটি রান পেলে ম্যাচের চেহারা ভিন্ন হতে পারত। আমার আর কিছু বলার নেই। নিয়ম তো আইসিসি করেছে, এটা তো আসলে আমাদের হাতে নেই। কিন্তু ওই সময় ওই চারটি রান খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল আমাদের জন্য।”
হৃদয় নিজেও এলবিডব্লু হন। সেটিও ছিল আম্পায়ার্স কল। এছাড়া কয়েকটি ওয়াইডের সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন হৃদয়, “আমি মনে করি যে আম্পায়ার কল দিয়েছেন, আম্পায়ার কল দিতেই পারেন। তারাও মানুষ, ভুল হতেই পারে। কিন্তু আমাদের আরও দু-একটি ওয়াইড ছিল, যেগুলো ওয়াইড দেননি। এখানে এ রকম ভেন্যুতে খেলা, যেখানে রান হচ্ছে না, লো-স্কোরিং ম্যাচ হচ্ছে, সেই জায়গায় একটি-দুটি রানও অনেক বড় ব্যাপার।”
এই তরুণ টাইগার ব্যাটার আরও বলেন, “আমি মনে করি, ওই চারটি রান বা দুটি ওয়াইড খুব ক্লোজ কল ছিল। এমনকি আমার আউটও আম্পায়ার্স কল ছিল। আমার কাছে মনে হয়, এই জায়গাগুলোয় উন্নতির সুযোগ আছে। আইসিসি যে নিয়ম করেছে, এটাতে তো আমাদের হাত নেই। আমার মনে হয়, যেটা হয়েছে, হয়ে গেছে।”
তবে সর্বোপরি হৃদয় হারের দায় নিজের কাঁধে নিয়েছেন। তার মতে, ম্যাচটা তাদের জেতা উচিত ছিল। জেতার মতো অবস্থানেও ছিলেন তারা। শুধু তিনি শেষ টেনে আসতে পারলেই হতো। তিনি বলেনম, “আমরা জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। আমার ম্যাচটা শেষ করে আসা উচিত ছিল। নতুন ব্যাটারের জন্য কন্ডিশন বুঝে খেলা কঠিন ছিল। ওই অবস্থান থেকে ম্যাচটা আমার শেষ করে আসতে হতো।”
এই জয়ে ডি গ্রুপ থেকে তিন ম্যাচে তিন জয়ে সুপার এইটে যাওয়া মোটামুটি নিশ্চিত দক্ষিণ আফ্রিকার। অন্যদিকে, প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকাকে হারানো বাংলাদেশের দুই ম্যাচে জয়-পরাজয় সমান-সমান। নিজেদের পরের দুই ম্যাচে নেদারল্যান্ডস ও নেপালের মুখোমুখি হবে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। রান রেটের হিসেব নিকেশ ছাড়াই সুপার এইটে যেতে দুই ম্যাচেই জিততে হবে বাংলাদেশকে।